হাওর ও কৃষক বাঁচাতে বিশ্বনাথে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা
বিশ্বনাথ সংবাদদাতা :
সিলেটের বিশ্বনাথের সর্ববৃহৎ চাউলধনী হাওর ও কৃষকদের বাঁচাতে হাওর পাড়ের ২৫ গ্রামবাসী মানববন্ধন কর্মর্সূচি ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। হাওরের ইজারা বাতিল, ইজারাকৃত হাওরের সীমানা নির্ধারন, স্লুইসগেইট নির্মাণসহ ১০দফা দাবিতে কয়েক হাজার কৃষকরা এতে অংশগ্রহণ করেছেন।
মঙ্গলবার (২২ডিসেম্বর) দুপুরে হাওরের মধ্যখানে ‘চাউলধনী হাওর ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলন’ কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বঘোষিত মানববন্ধনে হাওরপাড়ের ২৫টি গ্রামের কৃষক খন্ড খন্ডভাবে ব্যানার সহকারে ইজারাদের বিরুদ্ধে মিছিল দিয়ে উপস্থিত হন। এসময় নিজ নিজ ব্যানারে হাতে স্থানীয় বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান লেখা ফেস্টুন হাতে কৃষকরা প্রতিবাদ জানান। মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ‘চাউলধনী হাওর ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলন’ কমিটির প্রধান উপদেষ্ঠা মুহিবুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহিবুর রহমান বলেন- ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে হাওরের পানি সেচে মাছ আহরণ করছে জলদস্যু সাইফুল ইসলামসহ ইজারাদাররা। তাদের যন্ত্রনায় চাউলধনী হাওর পাড়ের ২৫ গ্রামের কৃষকরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। মেশিন বসিয়ে ইজারাদাররা হাওরের পানি সেচে মাছ আহরণের কারণে প্রায় কয়েক হাজার কৃষকরা আজ বোরো চাষাবাদ করতে পারছেন না। বোরো আবাদ করতে না পেরে হাজার হাজার কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন- আজ কৃষকদের পেটে ভাত নেই, এখন আর তাদের (কৃষকদের) কেউ আটকাতে পারবে না। তারা আন্দোলন করবেই। কারণ শুধু মাছ খেলেই চলবে না হাওর বাঁচাতে হবে, হাওরের কৃষকদেরও বাঁচাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি কামনা করে মুহিবুর রহমান আরও বলেন- বাংলার কৃষকদের প্রকৃত বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর মতো কৃষকদের কান্না সইতে পারেন না। জলদস্যুদের কারণে হাওরে কৃষকদের এ হাহাকার যদি তিনি জানতে পারেন, তাহলে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিশ্চয়ই এর বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
‘চাউলধনী হাওর ওকৃষক বাঁচাও আন্দোলন’ কমিটির আহবায়ক আবুল কালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব বাবুল মিয়া মাস্টারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমির আলী, আয়ারল্যান্ড প্রবাসী ডা. বদরুল ইসলাম তালুকদার ও বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএইচএম ফিরোজ আলী।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আন্দোলন কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক ও সাবেক মেম্বার সামসুদ্দিন, দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আন্দোলন কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক হাজী আরিফ উল্লাহ সিতাব, দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আন্দোলন কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক আব্দুল আজিজ, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ধন মিয়া, আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা আজম আলী মেম্বার, বিএনপি নেতা হাফিজ আরব খান, চৈতন নগর গ্রামের কৃষক আহমদ আলী, মৎস্যজীবি নেতা রওশন মিয়া, দৌলতপুরের রোহেল আহমদ কালু, নজির আহমদ ও রাসেল আহমদ। এছাড়াও সভায় ২৫টি গ্রামের আরও ২৫জন প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।