অটো চালক জব্বার এখন সফল চাষি
বিশেষ সংবাদদাতা :
পেশায় ছিলেন সিএনজিচালতি অটোরকিশার চালক। হঠাৎ স্বপ্ন জাগে কৃষিতে মনোনিবেশের। নিজের স্বপ্নের কথাগুলো শেয়ার করেন আরও দুই দুই সহকর্মীর কাছে। তারাও এতে সায় দেন। সেই থেকে নিজেকে কৃষিতে জড়াতে শুরু করেন। নিজের জমি না থাকায় গ্রামের একজনের জমি বর্গা নেন। সেই জমিতে চাষ করেন। তরমুজ দিয়ে ২০১৬ সালে কৃষিতে জড়ানোর শুরু করা বছরটি সুখকর ছিল না। তবে দমে যাননি। তার সুফলু এখনন পাচ্ছেন।
এ গল্প সিলেটের গোয়াইনঘাটে বিষমুক্ত টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বি হওয়া যুবক আব্দুল জব্বারের। বুধবার (৬ জানুয়ারি) উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের গহড়া গ্রাম সরজমিনে গিয়েও সফল এ টমোটো চাষির। পরিদর্শনকালে দেখা যায়- গহড়া গ্রামটি যেন সবজির অপার ভান্ডার। সফল কৃষক আব্দুল জব্বারের মতো গ্রামের অগণিত কৃষক কৃষানি সেখানে কৃষকিাজে ব্যস্ত। শীতকালীন সবুজ শাক সবজিতে ভরে উঠেছে পুরো গ্রামের ফসলী মাঠ। ক্ষেতের আল ধরে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে কৃষক আব্দুল জব্বারের টমেটোর ক্ষেত। এবার শীত মৌসুমে তিনি ৪ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো ফলিয়েছেন। কথা হয় এই সফল কৃষকের সাথে।
আলাপচারিতায় তিনি জানান- মায়ের উৎসাহে তিনি এতোদূর এগিয়েছেন। ২০১৬ সাল হইতে অধ্যাবধি তার টমেটো চাষাবাদ অব্যাহত আছে। প্রায় প্রতি বছরই এ থেকে আয় হয় নূন্যতম লাখ টাকা।
সফল এ কৃষক জানান- চলতি বছর তিনি গোয়াইনঘাটের ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের গহড়া গ্রামেই ৪ বিঘা জমিতে বিষমুক্ত টমেটো, ৪বিঘা জমিতে ধনিয়া, ১ বিঘা জমিতে গম ও ১ বিঘা জমিতে ভূট্রা চাষ করেছেন। তার ১ বিঘা জমিকে ভূট্রা চাষের বল্ক প্রদর্শনির জন্য বাছাই করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। তার রোপায়িত ফসল টমেটোর ক্ষেতে গেলে দেখা যায় হাইব্রিড জাতের টমেটোর দীর্ঘ সারী এভ ফলনও অত্যান্ত ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন- বিগত ১ সপ্তাহ হতে এ পর্যন্ত তার উৎপাদিত টমেটো থেকে ১২ হাজারেরও বেশি বিক্রি এসেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি পাইকারি ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। সম্পূর্ন বিষমুক্ত এসব টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। ফলন ভালো হওয়াতে তিনি অবশিষ্ট সময়ে টমেটো থেকে আরও পৌনে ২ লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন বলে আশাবাদী। টমেটো চাষসহ কৃষিতে সার্বিক পরামর্শ, তদারকি ও সহযোগিতা করায় তিনি গোয়াইনঘাটের উপজেলা কৃষি অফিসার, উপসহকারী কৃষি অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদেরও স্বাধুবাদ জানান।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সুলতান আলী জানান- গোয়াইনঘাটের মাটি সব ধরণের ফসল ফলানোর জন্য অত্যান্ত উর্বর। আবহাওয়াও ভালো। এখানকার পতিত সব জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে লোকবল সংকটেও উপজেলা কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। একজন কৃষকের সন্তান হিসেবে আমি সব সময় কৃষকদের দোরগোড়ায় থেকে সেবা দিতে পছন্দ করি। সকলের সহযোগিতার মানসিকতা অব্যাহত থাকলে অচিরেই গোয়াইনঘাটের কৃষি ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন চলে আসবে।