সুনামগঞ্জে ভেঙে পড়া সেই ব্রিজ : বুয়েট টেস্টে সাগরচুরির তথ্য
সময় সংগ্রহ :
নেসারুল হক খোকন : সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউসকান্দি আঞ্চলিক সড়ক প্রকল্পের ব্রিজ নির্মাণে সাগরচুরির তথ্য পাওয়া গেছে। সওজের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সহায়তায় সেতু নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তি লঙ্ঘন করে ভয়াবহ দুর্নীতিতে নেমেছে। পিসি গার্ডার (পিলার ছাড়া) ব্রিজের শক্তি থাকার কথা ৫ হাজার ৮০০ পিএসআই। অর্থাৎ, ৪০ এমপিএ।
কিন্তু দেশের প্রথমসারির একটি সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুসন্ধানে পাওয়া গেছে- মাত্র ২ হাজার ৯১০ পিএসআই বা ২০ দশমিক ১ এমপিএ। গার্ডার ব্রিজে বালি, পাথর ও সিমেন্টের সমন্বয়ে কংক্রিট তৈরির ঢালাইয়ের কাজে নিুমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় শক্তির দিক থেকে মান অর্ধেকে নেমে এসেছে। চাঞ্চল্যকর এমন তথ্যের প্রমাণ মিলেছে বুয়েটের পরীক্ষায়। যৌথভাবে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একই সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে ৭টি ব্রিজ নির্মাণ করছে। এর মধ্যে কুন্দানালায় ভেঙে পড়া সেই ব্রিজের গার্ডারের নমুনা (কংক্রিট) সংগ্রহ করে যুগান্তরের পক্ষ থেকে পরীক্ষা করা হয়। ঘটনার পর সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়।
কিন্তু এই কমিটি কাজের মান পরীক্ষা তো দূরের কথা, ঘটনাটিকে একটি দুর্ঘটনা বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। এদিকে ভেঙে পড়া কুন্দানালা ব্রিজের কম্প্রেসিভ স্ট্রেংথ অব কংক্রিটের অংশ বুয়েটের টেস্ট রিপোর্ট নিয়ে কথা হয় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুর এলাকার সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে। এ বিষয়ে তিনি ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন- ‘আমি আশা করি, চুক্তি অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান সড়ক ও জনপথের প্রতি আস্থা রাখতে চাই। আশা করি, তারা এই বিষয়টি দেখবে।’
কুন্দানালা ব্রিজে নিুমানের কাজ করার বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন- ‘প্রাকৃতিক বিচার এলে এভাবেই হয়।’
ভয়াবহ এমন নিম্নমানের কাজ করা হলেও সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম চলছেন উলটো পথে। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পন্ন করেছে উল্লেখ করে তিনি একটি প্যাকেজে ২০ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছেন। কুন্দানালা ব্রিজ’সহ এক প্যাকেজে তিনটি ব্রিজের কাজের জন্য বিল পরিশোধ সংক্রান্ত ৯নং আইপিসিতে নিম্নমাণের কাজকে সমর্থন করে গেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি সর্বশেষ ১৪ নভেম্বর স্বাক্ষরিত বিলের মন্তব্যের কলামে নিজের হাতে লিখেছেন- ‘দ্য ওয়ার্ক হেজ বিন ডান এসপার স্পেসিফিকেশন অব কন্টাক্ট।’ অর্থাৎ চুক্তি অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একই বিলে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী নজরুল ইসলাম মন্তব্যের কলামে লিখেছেন- কাজ ‘সন্তোষজনক।’
সড়ক ও জনপথের সুনামগঞ্জের একজন কর্মকর্তা জানান- ‘নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম কাজের মান পরীক্ষা না করেই কীভাবে বললেন চুক্তি অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে? আগে এই বিষয়টি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। না হলে এভাবেই চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আর বদনাম হবে প্রতিষ্ঠানের। ব্যক্তির দায় কেন প্রতিষ্ঠান নেবে?
বুয়েটের পরীক্ষা : কুন্দানালায় ধসে পড়া ব্রিজের অংশবিশেষ সংগ্রহ করে ওই সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে বুয়েটে পরীক্ষা করানো হয়। নমুনা সংগ্রহের সময় ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। ২৯ মার্চ বুয়েটের কংক্রিট ল্যাবরেটরিতে ‘কম্প্রেসিভ স্ট্রেংথ’ (চাপন শক্তি) পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেওয়া হয়। ১২ এপ্রিল বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. এবিএম বদরুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায়। রিপোর্টে বলা হয়- কম্প্রেসিভ স্ট্রেংথ (চাপন শক্তি) ২৯১০ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি) এবং ২০ দশমিক ১ এমপিএ (মেগা প্যাসকেল প্রেশার ইউনিট) উল্লেখ করা হয়। প্রকৌশলীদের ভাষায় এই টেস্ট রিপোর্ট বলছে- কন্টাক্ট অ্যাগ্রিমেন্টের মানের প্রশ্নে অর্ধেক পরিমাণ কাজ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আরেকটু খোলাসা করে বললে- ‘অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ হয়েছে পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণে।’ চুরির প্রকৃত চিত্র উপস্থাপনে টেস্ট রিপোর্টে মন্তব্যের কলামে সংশ্লিষ্ট ব্রিজের নকশাকারক প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
এরপর প্রকল্পের নথিপত্র সংগ্রহ করে দেখা যায়- ৪০ মেগা প্যাসকেল প্রেশার ইউনিট (এমপিএ) ক্ষমতাসম্পন্ন কংক্রিট সংমিশ্রণের চুক্তি করা হয়। প্রতি এমপিএ সমান ১৪৫ পিএসআই। ১৪৫ পিএসআইকে ৪০ দিয়ে গুণ দিলে ৫ হাজার ৮০০ পিএসআই হয়। এই চুক্তি পূরণ করতে হলে এক ঘনফুট সিমেন্টের সঙ্গে ১ দশমিক ২৫ ঘনফুট বালি এবং ২ দশমিক ৫ ঘনফুট ভাঙা পাথর দিয়ে ব্রিজের গার্ডার ঢালাই করতে হবে। বুয়েটের টেস্ট রিপোর্টে এখানেই সাগরচুরির চিত্র ধরা পড়ে। একেবারে হাতেকলমে হিসাব করলে চুক্তির অর্ধেক ক্ষমতাসম্পন্ন কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১১০ কোটি টাকায় মোট ৭টি ব্রিজ নির্মাণে শতবছরের গ্যারান্টি দিয়ে এই কন্টাক্ট অ্যাগ্রিমেন্ট (কাজের চুক্তি) করা হয়। ইতোমধ্যে ৭টি ব্রিজ নির্মাণের বিপরীতে ৫২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়ে গেছে। তবে যে পরিমাণ কাজ করা হয়েছে, এর কোনো টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
জানা যায়- সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর সড়ক প্রকল্পে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে মোট ৭টি ব্রিজ নির্মাণ করছে। আঞ্চলিক সড়ক স্থাপনে এই প্রকল্পে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণে মোট ১১০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। কাজ পায় যৌথ তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো : এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ও ওরিয়েন্টাল ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড। এই কাজ চলমান অবস্থায়ই ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নির্মাণাধীন কুন্দানালা সেতুর ৫টি গার্ডার ভেঙে পড়ে। সেতুটি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের নির্বাচনী এলাকায়।
প্রকল্পের নথিপত্র থেকে আরও জানা যায়- ৭টি পিসি গার্ডার ব্রিজে শিডিউল অনুযায়ী কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বরাদ্দও রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কুন্দানালা’সহ ৩টি ব্রিজের মাঠপর্যায়ের ল্যাবরেটরি টেস্ট’সহ আনুষঙ্গিক খরচের জন্য একটি বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব সংক্রান্ত নথি পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়- সেমিপাকা ল্যাবরেটরি অফিস নির্মাণ, অফিসের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়, সাইনবোর্ড, ট্রাফিক সিস্টেম, প্রগ্রেস ফটোগ্রাফার রাখার বিষয়ে ২ কোটি ৫ লাখ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ৭টি ব্রিজের মধ্যে যুগান্তরের তথ্যানুসন্ধানে পাওয়া ৩টি ব্রিজের বিল বাবদ ১৫ লাখ টাকা পরিশোধের প্রমাণও দেখা যায়। অন্য চারটি গার্ডার ব্রিজের ক্ষেত্রে এ সংক্রান্ত বরাদ্দ আরও বেশি।
এদিকে ২৩ মে জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ থেকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাগলা পর্যন্ত নির্মাণাধীন ৭টি ব্রিজ নির্মাণ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়- সবকটি ব্রিজের কাজ বন্ধ রয়েছে। কোনো ব্রিজের আশপাশে কোনো সেমিপাকা ঘরও নেই। ভাঙাচোরা টিন দিয়ে ছাপড়া ঘর বানানো পাওয়া গেছে কয়েকটিতে। সেখানে রাখা হয়েছে কংক্রিটের মালামাল।
তথ্যানুসন্ধানের সময় এ বিষয়ে ২৫ মার্চ সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করা হলে নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন- ‘আমার কাছে পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউসকান্দি আঞ্চলিক সড়ক প্রকল্পের কোনো টেস্ট রিপোর্ট নেই। সব টেস্ট রিপোর্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রয়োজন হলে সংগ্রহ করা যাবে। কী কী লাগবে, আমাকে জানান।’ এরপর ওইদিনই বিকালে অ্যাপ্রোভাল মিক্স ডিজাইন, রড টেস্ট, সিমেন্ট টেস্ট, বালি ও পাথর টেস্টের রিপোর্ট চেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর ই-মেইলে আবেদন করা হয়। কিন্তু গত দুই মাসেও তা পাওয়া যায়নি। এমনকি প্রতিবেদকের ফোন নম্বরও ব্লক করে দেন।
এদিকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান কাজ চলাকালীন সার্বক্ষণিক প্রকল্প এলাকায় তদারকির দায়িত্বে থাকার কথা। কিন্তু তিনি যে থাকতেন না, তা নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম নিজেই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন। অপর একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যকে বলেন- মোস্তাফিজ সাইট পরিদর্শন করেছেন শিডিউল অনুযায়ী। কাজ নিশ্চিত করতে নয়, সাইটে যেতেন চুরির হিসাব রাখার জন্য। কী কী কাজ কম করা হয়েছে, তার হিসাব তুলে ধরে চুরির ভাগ বসান। সড়কের প্রত্যেকটি প্রকল্পেই চলে এমন চুরির হিসাব-নিকাশ। অল্পদিনের মধ্যেই এসব কর্মকর্তা বিপুল বিত্তবৈভবেরও মালিক হয়েছেন। শিডিউল অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করলে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পে কোয়ালিটি প্রশ্নে এই বিশাল ব্যবধান থাকার কথা নয়। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয় কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার কল করার পরও তিনি কল রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, গার্ডার ব্রিজ নির্মাণে নজিরবিহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও চরম দায়িত্বহীনতার বিষয়ে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। কুন্দানালা ব্রিজ ভেঙে পড়লে দুর্ঘটনা বলে ধামাচাপা দেওয়ার সব ধরনের চেষ্টা করা হয়। চলমান তদন্ত রিপোর্টও সেদিকে নেওয়া হয়েছে। তবে ওই সংবাদমাধ্যমের দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। ব্রিজ নির্মাণে দিনের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজই করা হয়েছে রাতের অন্ধকারে। এলাকাবাসীর চোখ ফাঁকি দিতে মূলত এই পথ বেছে নেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন- সব নিম্নমানের সিমেন্ট ও রড দেওয়া হয়েছে পাইলিংয়ে। এমনকি পাইলিংয়ের রিংয়ে ২৪টির পরিবর্তে ১২টি রড দেওয়া হয়। এ রকম নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকায় যেসব সচেতন শ্রমিক প্রতিবাদ করেছেন, তাদের কাজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এছাড়া টাকা দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী অনেকের মুখ বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে তারা ব্যর্থ হন। ৪ এপ্রিল ‘সুনামগঞ্জের গার্ডার ভেঙে পড়া আলোচিত ব্রিজ, দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজই হয় রাতে’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ওই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ৬ এপ্রিল ‘বোনজামাইয়ের নামে ঠিকাদারি লাইসেন্স, একচেটিয়া কাজ হাতিয়ে নিচ্ছেন নির্বাহী প্রকৌশলী’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সওজের প্রধান প্রকৌশলীকে ফোন করে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন। সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখনও আলোর মুখ দেখেনি।
টিআইবির বক্তব্য : বিষয়টি অবহিত করে এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান শনিবার ওই সংবাদমাধ্যকে বলেন- উপকারভোগী মানুষ সব সময়ই অভিযোগ করে থাকেন অবকাঠামোগত উন্নয়নে মান নিশ্চিত করা হয় না। বুয়েটের টেস্ট রিপোর্টই এসব অভিযোগের পক্ষে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করেছে।
তিনি বলেন- অবশ্যই মান নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ কর্মকর্তারা আছেন। তারা কেন সরকারি ব্যয়ে নির্মিত উন্নয়ন প্রকল্পের মান নিশ্চিত করলেন না, তা মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান প্রধান উপযুক্ত তদন্তের ব্যবস্থা করবেন।
প্রধান প্রকৌশলী যা বললেন : এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুরের কাছে প্রশ্ন ছিল সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে ভেঙে পড়া কুন্দানালা ব্রিজ’সহ যে ৭টি ব্রিজ নির্মাণাধীন, সেগুলোর মান নিশ্চিত করার জন্য বুয়েটে টেস্ট করা হয়েছিল কি না? জবাবে তিনি শনিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন- ‘আমরা তো তদন্ত কমিটিতে ওইভাবে যুক্ত করিনি। আর এটা তো ঠিকাদারের রানিং কাজ, ঠিকাদার করে দিবে-এই কন্ডিশন থেকে ওইভাবে টেস্ট করা হয়নি। ইতোমধ্যে মনে হয় দুই-তিনটা গার্ডার হয়েও গেছে। এছাড়া টাইম টু টাইম টেস্ট করা হয়ে থাকে।’ টাইম টু টাইম মান নিশ্চিত করার জন্য টেস্ট করা হলে মানের প্রশ্নে এত তফাত হয় কীভাবে-জানতে চাইলে বলেন- টেস্ট রিপোর্ট আপনি পেয়েছেন ঠিক আছে। আসলে কোন জায়গা থেকে স্যাম্পল নিয়েছেন-না দেখে, না জেনে তো কথা বলতে পারব না। এরকম হওয়ার কথা না আরকি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা প্রকৌশলী বায়েজিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন- আমি নিম্নপদে চাকরি করি। এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারব না।
সূত্র : দৈনিক যুগান্তর