ছাতকে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় কাউন্সিলর তাপসকে প্রধান আসামি করে মামলা
বিশেষ সংবাদদাতা :
সুমামগঞ্জের ছাতকে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ছাতক পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ২৬জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ জুলাই) নৌ-পুলিশের এসআই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাতক থানার (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন।
সূত্রে জানা যায়- কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীর আদেশেই গত রোববার রাতে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নেয়ামতপুর এলাকার চেলা নদীতে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- নৌ-পুলিশের ওসি মঞ্জুর আলম, উপ-পরিদর্শক হাবিবুর রহমান, সবুজ হোসেন, কনস্টেবল সৈকত, সাব্বির আহমেদ ও শাহজাহান।
এদিকে, মামলার খবর পেয়ে প্রধান অভিযুক্ত কাউন্সিলর তাপস চৌধুরী পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়- শিল্পনগরী ছাতকে নৈরাজ্যের ত্রাস বপন করে চলছেন এই পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরী। তার ইশারায় দীর্ঘদিন ধরে ছাতকে নানা অপকর্ম চলে আসছে। সর্বশেষ রোববার রাতে স্থানীয় চেলা নদীতে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে তারই নির্দেশে।
নৌ-পুলিশ সূত্রে জানা যায়- ফরেষ্ট বিভাগের সরকারী এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতি রাতেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিল স্থানীয় অসাধু মহল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ৯টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে ৫-৬টি বাল্কহেড লোড করছিল অর্ধশতাধিক শ্রমিক। খবর পেয়ে রোববার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে নৌ-পুলিশের একটি দল।
বর্ষার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফরেষ্ট বিভাগের ভূমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া করেন নৌ-পুলিশের ওসি মনজুর আলম। একটি সিজার লিষ্ট তৈরী করে ফেরার পথে চেলা নদীতে ৪টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে প্রায় ৫০-৬০জন সন্ত্রাসী লাঠি-সোটা নিয়ে নৌ-পুলিশের নৌকাকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে নৌকায় থাকা নৌ-পুলিশের উপর তারা চালায় বর্বরোচিত হামলা। প্রানের ভয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়েও রক্ষা পাননি নৌ-পুলিশের সদস্যরা। তাদেরকে মেরে নদীতে ফেলে দেয় ৫০-৬০জনের এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। প্রাণ রক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরা নদীতে সাঁতার কেটে নেয়ামতপুরে এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা নৌ-পুলিশের নৌকা ভেঙে নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে সোমবার সকালে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এবং নৌ-পুলিশের এসপি সম্পা ইয়াসমিন আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান।
নৌ-পুলিশের ওসি মনজুর আলম জানান- আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। হামলার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ১২টি মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ’সহ মালামাল লুট করে নেয়।