হবিগঞ্জে নেই পিসিআর ল্যাব : ভোগান্তিতে ৯ উপজেলার মানুষ
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা :
করোনা সংক্রমণ বাড়লেও হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য স্থাপন করা হয়নি পিসিআর ল্যাব। অথচ প্রায় এক বছর আগে ৪ জন ল্যাব টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরেজমিনে দেখা যায়- হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের কোথাও মেলেনি পিসিআর ল্যাবের হদিস, এতে ৯ উপজেলার মানুষকে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।
প্রবাসী শাহিন আহমেদ বলেন- করোনা পরীক্ষার জন্য আমাদেরকে ২৪ ঘন্টার সময় দেওয়া হয়। এর ভিতরে করোনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য, কিন্তু আমাদের হবিগঞ্জে নেই পিসিআর ল্যাব, সিলেট কিংবা ঢাকা থেকে রিপোর্ট আসতে লেগে যায় ৩ থেকে ৫দিন। রিপোর্ট নিয়ে আমরা থাকি অনিশ্চয়তায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই যেন খুব তাড়াতাড়ি হবিগঞ্জে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে দেন।
অন্যদিকে, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের প্যাথলজির সামনে নেওয়া হচ্ছে করোনা রোগীর স্যাম্পল, এতে আতঙ্কে আছেন সাধারণ রোগীরা। করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে পরীক্ষার চাপও। এতে হিমসিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট তুহিন আহমেদ জানান- আমরা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্যাম্পল কালেকশন করি। আগের চেয়ে এখন রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে, তবে বেশিরভাগ রোগী ১২টার দিকে আসেন। সবাই একসাথে আসার কারণে আমরা হিমসিম খেয়ে যাই, আমাদের আরেকজন টেকনোলজিস্ট দরকার।
হবিগঞ্জে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। জেলায় পিসিআর ল্যাব না থাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সিলেট ও ঢাকায়। এতে রিপোর্ট পেতে সময় লাগে ৩-৫দিন, সর্বোচ্চ ৭দিনও লাগে। রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত অবাধ চলাচলে সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে। ফলে, ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। পিসিআর ল্যাবের জন্য প্রায় ১ বছর আগে ৪ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এদের দু’জনকে আবার অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। রিপোর্ট পেতে দেরি হয় বলে অনেকেই করাচ্ছেন না পরীক্ষা।
হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন কে এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান- অবকাঠামো কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়ায় এবং গণপূর্ত বিভাগ আমাদের কাছে হস্তান্তর না করায় এতোদিন সম্ভব হয়নি, গণপূর্ত বিভাগ খুব দ্রুত কাজ করছে। কাজ শেষ করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করলেই খুব দ্রুত পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হবে বলে তিনি জানান।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন মুখলিছুর রহমান উজ্জল জানান- হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩শ ৮৪ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় ২০০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৮ জন।