জাপান ৩০ লাখ ডোজেরও বেশি অ্যাস্ট্রাজেনিকা টিকা পাঠাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সময় সিলেট ডেস্ক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন- জাপান কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ধাপে ধাপে ৩০ লাখ ডোজেরও বেশি অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড ভ্যাকসিন পাঠাবে।
তিনি বলেন- ‘এই সংকটময় সময়ে (ভ্যাকসিন) সরবরাহের জন্য আমি বাংলাদেশের পক্ষে জাপানের সরকার ও জনগণের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (এইচএসআইএ) জাপানের রাষ্ট্রদূত নওকি ইতোর কাছ থেকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম চালান হিসাবে ২,৪৫,২০০ ডোজ গ্রহণ উপলক্ষে এ মন্তব্য করেন।
ড. মোমেন বলেন- আগে জাপান বলেছিল, তারা বাংলাদেশে ২৯ লক্ষ ডোজ টিকা পাঠাবে। তবে, পরে তারা আরও ১.৫ লাখ ডোজ যুক্ত করেছে, ফলে মোট পরিমাণ প্রায় ৩০.৫ লাখ ডোজ দাঁড়াচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান- প্রায় ৫ লাখ ডোজের দ্বিতীয় চালানটি আগামী শুক্রবার এখানে পৌঁছবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- ভ্যাকসিনের এই চালানটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রায় আড়াই লাখ মানুষ অক্সফোর্ডের তৈরি এ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বাংলাদেশ এপর্যন্ত ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই) থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ১.২ কোটি ডোজ পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন- দেশবাসীর জন্য টিকার অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ক্রয়ের পাশাপাশি কোভ্যাক্সেও আওতায় বিভিন্ন উৎস থেকে আরও বেশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংগ্রহের সুব্যবস্থা করেছে। মন্ত্রী বলেন- ‘আমরা আশা করি, আগামী সংকটময় মাসগুলোতে দেশে ভ্যাকসিনের অভাব হবে না।’
কোভ্যাক্স হচ্ছে একটি বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ টি ভ্যাকসিনের ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকারের লক্ষ্যে ভ্যাক্সিন অ্যালায়েন্স গাভি পরিচালিত একটি বৈশ্বিক জেট। তবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- বাংলাদেশ তার জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার জন্য দেশে ভ্যাকসিন সহ-উৎপাদনের দিকে যেতে আগ্রহী। তিনি বলেন- ‘আমাদের স্থানীয়ভাবে এটি (ভ্যাকসিন) উৎপাদন করতে হবে… অন্য কোন বিকল্প নেই। আমরা শিগগিরই উৎপাদনে যাব।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোতিগি তোশিমিতসুর কাছে প্রেরিত এক চিঠিতে ডাব্লিউএইচও-ক্যোভাক্স ব্যবস্থার আওতায় বাংলাদেশকে ৩০ লাখেরও বেশি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের কোভিড-১৯ মহামারী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রত্যক্ষ বাজেট সহায়তা’সহ জাপানের অব্যাহত সহায়তার কথা গভীর প্রশংসার সাথে স্বীকার করেছেন।
মোমেন জাপানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখেছেন- ‘বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করতে সম্পদের গতিশীলতা নিশ্চিতকরণে এই মহামারী নিয়ন্ত্রণে আমরা একটি বৈশ্বিক ও সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান জানাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাপানের ২২ জুন ভ্যাকসিন সামিট আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী সুগার নেতৃত্ব এবং মহামারী মোকাবেলায় ভ্যাকসিন ও তহবিলের প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন- ‘২০২২ সালে দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশতম বার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি উপলক্ষে উভয় দেশই এখন বাংলাদেশ-জাপানের সম্পর্ককে ‘সার্বিক অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত’’ পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।’
বাংলাদেশ জাপানকে একজন সত্যিকার ও বিশ্বস্ত বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন সহযোগী বিবেচনা করে একথা পুনঃনিশ্চিত করে মোমেন আশা প্রকাশ করেন যে চলমান কোভিড সহযোগিতা ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার ও গভীর করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোকিও অলিম্পিক গেমসের ব্যাপক সাফল্য কামনা করেন।