মেহজাবীন-হিমিকে পুরস্কৃত করলো বাংলাদেশ পুলিশ
বিনোদন ডেস্ক
তরুণ নাট্যনির্মাতা মাহমুদুর রহমান হিমি পরিচালিত গেল ঈদের আলোচিত নাটক ‘আলো’র জন্য ছোটপর্দার তারকা অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে সম্মান জানালো বাংলাদেশ পুলিশের উইমেন্স নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন)।
কর্মক্ষেত্রে একজন নারী সার্জেন্টের ঘাত প্রতিঘাত, প্রতিবন্ধকা নাটকে দারুণভাবে উপস্থাপন করায় এই সম্মান জানানো হয় নির্মাতা হিমি ও মেহজাবিন চৌধুরীকে।নাটকটির রচয়িতা হিসেবে এই সম্মাননা পেয়েছেন মেহজাবিন।এতে অভিনয়ও করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মেহজাবীনের হাতে সম্মানসূচক ক্রেস্টটি তুলে দেন বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন) এর সভাপতি ও ডিআইজি (প্রটেকশন এন্ড প্রটোকল), স্পেশাল ব্রাঞ্চ আমেনা বেগম।
আমেনা বেগম বলেন- বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক এর পক্ষ থেকে আজকে অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে সম্মান জানিয়েছি। কারণ কিছুদিন আগে মেহজাবীন ও তার টিম একজন নারী পুলিশ সার্জেন্ট এর গল্প নিয়ে একটি নাটক করে, নাটকটি আমাদের মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। এই নাটকের কারণে অনেকের মধ্যে একটি ধারণা পরিস্কার হয় যে, রাস্তায় ট্রাফিক ডিউটি পালন করতে গিয়ে নারী পুলিশ অফিসারদের ত্যাগ তিতিক্ষার কথা অনেকে জানতে পেরেছেন।
আমেনা বেগম বলেন- মেহজাবীনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে, ভবিষ্যতে আরো বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে আবার তার সাথে বসবো।
এমন সাফল্যে অনুপ্রেরণীয় হয়ে নাট্যনির্মাতা মাহমুদুর রহমান হিমি বলেন- এটি সত্যিই আমার জন্য অন্যরকম একটা পাওয়া এবং অন্য-ধরের একটা সম্মাননা আমার জন্য। সত্যি কথা বলতে গেলে আমাদের আলো নাটকের টিমের জন্য আন এক্সপেক্ট একটা সম্মান ছিল।আমরা যখন কাজটি করেছি, তখন আমরা আশাও করিনি যে-এমন একটা সম্মাননা আমরা পাবো।কাজটির জন্য এমন একটা সম্মাননা পাওয়া একজন নির্মাতা হিসেবে আমি বলবো আশীর্বাদ আমার জন্য। এই সম্মাননা আমার ভালো কাজের দায়বদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন বুঝতে পারছি আরও দায়িত্ব নিয়ে সামনে ভালো কাজ করতে হবে এই উপলব্ধি হয়েছে নিজের মধ্যে। যতদিন বাঁচবো সামনে মানুষের জীবন বোধের গল্প নিয়ে কাজ করে যাবো। আমি দর্শকের কাছে মানুষের জীবনের গল্প পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাটা যেভাবে করছি সবসময়, ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতায় অবহৃত রাখার চেষ্টা করবো। পাশাপাশি ধন্যবাদ দিতে চাই আলো নাটকের অভিনয়শিল্পী মেহজাবিন চৌধুরী এবং মনোজসহ সকলকে।কারণ তারা ছাড়া কাজটি এতো সুন্দর করে আমি করতে পারতাম না।
এমন সম্মাননা পেয়ে উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী মেহজাবীন নিজেও। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন- যখন এই কাজটি করি, তখন বুঝিনি বাংলাদেশ পুলিশ এই নাটকটি দেখবে এবং সবাই এতো পজিটিভ ফিডব্যাক দিবেন। শুধু তাই না, আয়োজন করে যে সম্মান তারা আমাদের আজকে দিলেন, এটা যে কোনো অভিনয় শিল্পী বা নির্মাতার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতার। ভবিষ্যতে আমরা বাংলাদেশ পুলিশের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আরো কাজ করতে পারবো, সেটার জন্য এই পুরস্কার অনুপ্রাণিত করবে।
মেহজাবীন জানান- ২০১৯ সালে গাড়ি নিয়ে জ্যামে আটকে থাকার সময় একটি ঘটনা দেখে ‘আলো’ নাটকের গল্পের প্লট তার মাথায় আসে। তিনি জ্যামে গাড়িতে বসে দেখেন একটু দূরে একজন নারী সার্জেন্ট পিকাপ ড্রাইভারের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িত। মেহজাবীন লক্ষ্য করেন- সার্জেন্টটি নারী হওয়ায় পিকাপ চালক তার কথাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। সেই মুহূর্তের ছবিটাও নিজের গাড়িতে বসে তুলেন মেহজাবীন। যার উপর ভিত্তি করেই ‘আলো’ নাটকটি নির্মিত হয়। যা সাধারণ দর্শকের পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশও কাজটি পছন্দ করেন।
সাম্প্রতিক একটি নাটক নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে এই অভিনেত্রী বলেন- অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য জড়িত সবাই আমরা ক্ষমা চেয়েছি। তবু যারা কষ্ট পেয়েছেন, আমাদের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। লক্ষ্য থাকবে, সামনে আরো গুছিয়ে কাজ করার। আমাদের দিক থেকে কোনো ভুল বার্তা যেন সোসাইটি না পায়, সেজন্য সমাজের ইতিবাচক দিকগুলো নাটকে বেশি করে তুলে ধরবো। বিশেষ করে স্পেশাল বাচ্চাদের নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিবে, এমন বেশকিছু চিত্রনাট্য তৈরী হচ্ছে। যেগুলোতে আমরা কাজ করবো, খুব জলদি সবাই।