রাজনীতি, নির্বাচন এবং একজন হাবিবুর রহমান হাবিব
শেখ জাফর আহমদ
হাবিবুর রহমান হাবিব। সিলেট জেলার দক্ষিন সুরমা উপজেলার ১০নং কামাল বাজার ইউনিয়নের ধরগাঁও গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। বাংলাদেশের আলো বাতাসে বেড়ে উঠা টগবগে এই তরুণ ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন মেধাবী এবং বিচক্ষণ।
গ্রাম্য পাঠশালা আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে হাবিবুর রহমান হাবিব বাংলাদেশের সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় এমসি কলেজে লেখাপড়া করেন। তারুন্যের উন্মাদনায় গা ভাসিয়ে তার অনেক সতীর্থ যখন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছিল, সেসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্ত-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় আর ন্যায়নিষ্টা প্রতিষ্ঠায় নিজের নাম লিখান এশিয়া উপমহাদেশের বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগে।
মুলত সেই থেকেই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন আর অসম্প্রধায়িক বাংলাদেশ গড়ায় প্রত্যয় নিয়ে রাজনৈতিক জীবনের যাত্রা শুরু করেন। সদর থানা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য আর এমসি কলেজের ছাত্রনেতা হিসাবে সেদিনের হাবিবুর রহমান হাবিবকে কোন রক্তচক্ষু কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমিয়ে রাখতে পারেনি।
শিক্ষাজীবনের গন্ডি পেরিয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। সেখানেও মা ও মাটি আর নাড়ির টান বিন্দু পরিমানও ভুলেননি। সেখানেও নিজের নাম লেখান যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের খাতায়। দায়িত্বভার গ্রহণ করেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের।
এরপর ধাপে ধাপে তিনি যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তিতে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ত্রান ও পুনর্বাসন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ১/১১ এর সময় যুক্তরাজ্য আওয়ামী পরিবারের সাথে থেকে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করেছেন।
রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত একজন মানুষ ব্যকুল হয়ে উঠেন নিজের দেশের জন্য কাজ করা, নিজ এলাকার উন্নয়ন করা, গরিব দুঃখী-মেহনতি মানুষের পাশে দাড়ানো, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। সেই স্বপ্নেই বিভোর হয়ে উঠেন, চলে যান নিজ মাতৃকায়, শুরু করেন উন্নয়নমূলক কাজ, জ্ঞানের আলো ছড়ানোর জন্য নিজের অর্থায়নে গড়ে তুলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের দিকে প্রসারিত করেন সাহায্যের হাত। সুখে-দুঃখে এগিয়ে যান সবার তরে। স্থানীয় এলাকার উন্নয়নে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালবাট নির্মাণ, শীতল পাটির বালাগঞ্জের বড়ভাগা নদীর উপর ব্রীজের কাজ শুরু, ফেকুয়া নদীর উপর ব্রীজের কাজ শুরু’সহ মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় অগ্রনী ভুমিকা পালন করে আসছেন। এ যেন কোন জনপ্রতিনিধি না হয়েও জনগনের সেবক।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও অঙ্গসংগঠনের সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে সংগঠনের কাজকে তরান্বিত ও গতিশীল করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় নির্বাচনী এলাকার ছাত্র ও যুব সমাজের সাথে গড়ে তুলেছেন ভালোবাসা ও সম্প্রীতির সেতুবন্ধন। তিনি নিজ মেধা, জ্ঞান ও যোগ্যতার ফলে ঐতিহ্যবাহী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
সিলেট-৩ আসনের সদ্য সাবেক এমপি মাহমুদুস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে এই আসনটি শুন্য হয়ে পড়লে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের কাছে উক্ত এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ চেয়ে নৌকা মার্কার জন্য আকুল আবেদন জানান হাবিবুর রহমান হাবিব। জনগণের স্বতঃস্পুর্ত সমর্থন, রাজনৈতিক দক্ষতা ও ক্লিন ইমেইজের রাজনীতিবিদ হিসাবে দলীয় হাইকমান্ড হাবিবুর রহমান হাবিবকে নৌকার প্রার্থী হিসাবে বেচে নেন। দলীয় মার্কা পেয়ে ছুটে যান সকল নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাসীদের ঘরে-ঘরে। তাদের দোয়া-সাহায্য-সহযীগিতা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তাদেরকে সাথে নিয়েই নেমে পড়েন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায়।
কি সকল? কি বিকাল? কি সন্ধ্যা? কি রাত? ছূটে যাচ্ছেন ভোটারের ঘরে-ঘরে। সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশ-মিটিং-মিছিল-জনসভা-পথসভা করে যাচ্ছেন।
সিলেট জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আগমনে সিলেট-৩ আসন সর্বদা সরগরম করে রাখছেন। দল-মত নির্বিশেষে উন্নয়নের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছেন।
জনগনের ভালোবাসা, দলীয় নেতাকর্মীর আস্থা অর্জন, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা ও স্বতঃস্ফুর্ত সমর্থনের এই জনজোয়ার প্রমাণ করে আগামী ৪ঠা সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে নৌকার বিজয় হবে। স্বাধীনতার প্রতীক, ৩০ লক্ষ শহীদদের প্রতীক, ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর প্রতীক নৌকা মার্কা আবারও সিলেট-৩ আসনে বিজয়ী হয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করবে। বঙ্গবন্ধুর অসামপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাবিবুর রহমান হাবিব ভূমিকা রাখবেন, এটাই তাঁর প্রত্যয়, এটাই তাঁর প্রত্যাশা।
লেখক : যুক্তরাজ্য প্রবাসী, রাজনৈতিক কর্মী।
[বি.দ্র. : মুক্তকথন বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব, এর সাথে দৈনিক সময় সিলেট-এর সম্পাদকীয় নীতিমালা সম্পর্কিত নয়। দৈনিক সময় সিলেট সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে মুক্তকথনে প্রকাশিত লেখার দায় দৈনিক সময় সিলেট-এর নয়।]