বৈধভাবে মাল্টায় আসতে দুই লাখের বেশি নয়: আয়েবা
বিশেষ সংবাদদাতা
একটা সময় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু কিছু অসাধু চক্রের কারণে তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। মাল্টায় এখন দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা যেন আর কোনোভাবেই হাতছাড়া না হয় সেদিক নজর রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) ইউরোপ’সহ মাল্টায় নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (আয়েবা) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি ফখরুল আকম সেলিম এসব কথা বলেন।
ফ্রান্সে আয়েবা হেড অফিস থেকে এদিনে বিকেলে অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সহ-সভাপতি ফখরুল আকম সেলিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য দেন- আয়েবা মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ।
কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন- মানবচক্রের খপ্পরে পড়ে মাল্টায় যে ১৬৫ বাংলাদেশি জেলে বন্দি রয়েছেন তাদের মুক্তির ব্যাপারেও আয়েবা উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে মাল্টার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সচিব কেবিন মাহনে ও অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনার পর স্পষ্ট হয় যে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কারাবন্দিদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করেছে এবং তাদের দেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন- তারপরও আয়েবার নিয়োগপ্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী কালেয়ার পক্ষে মাল্টা সাংবিধানিকে আদালতে মামলা করে প্রতিটি কারাবন্দিকে মুক্ত করা সম্ভব ছিল। তবে সেটি বেশ ব্যয় বহুল প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন- বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রায় বিশ হাজারের বেশি দক্ষ শ্রমিক মাল্টায় আসার সুযোগ রয়েছে।
ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, সুইপার, রেস্টুরেন্ট এবং ট্যুরিজম খাতে কাজ করতে সক্ষম এমন শ্রমিকের বড় চাহিদা রয়েছে মাল্টায়। তবে তাদের অবশ্যই ইংরেজী ভাষায় কিছুটা দক্ষতা থাকতে হবে। মাল্টার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন আয়েবাও চাইলে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে পারে।
আয়েবা যেহেতু একটি অলাভজনক সামাজিক প্রতিষ্ঠান, তাই তারা কোনও রকম এ ধরনের অর্থনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হতে পারবে না। তবে কেউ যেন মাল্টায় আসতে গিয়ে প্রতারণার শিকার না হন এবং সঠিক নিয়ম অনুযায়ী তারা দেশটিতে আসতে পারেন সেই লক্ষ্যে আয়েবা কাজ করে যাবে। মাল্টায় আসার এই সুযোগ নিতে পারেন বাংলাদেশিরাও।
তবে যোগ্যতা প্রমাণের পর ফাইল চার্জ এবং যাতায়াত ভাড়া হিসেবে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা লাগতে পারে মাল্টা আসতে। এর বেশি টাকা দিয়ে আসার কোনো কারণ নেই বলে জানান আয়েবা মহাসচিব।
সেখানকার কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই চান না যে তাদের দেশে অযোগ্য মানুষ আদম দালালদের বেশি টাকা দিয়ে এসে পরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে এবার মাল্টা সরকার কঠোর হবে।
করোনা মহামারির সঙ্গে অর্থনৈতিক বিপর্যয়, সামাজিক অসন্তোষ সেই সঙ্গে বর্ণবাদী দলগুলোর উত্থান সবগুলো দেশেরই সরকার প্রধানদের মা’থা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এ বিষয়ে কোনো পরামর্শ জানতে চাইলে যে কেউ আয়েবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
মাল্টা এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নেও আয়েবা তার ভূমিকা পালন করবে। দেশটিতে একটি শক্তিশালী বাংলাদেশি কমিউনিটি গঠনে অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ আসোসিয়েশন আয়েবা তার যোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আয়েবা এক্সিকিউটিভ শরীফ আল মমিন, এমদাদুল হক স্বপন ও টি এম রেজা।