আমি মরে গেলেও এই মামলা চলবে: নীলা চৌধুরী
সময় সিলেট ডেস্ক
সালমান শাহর ‘অপমৃত্যু’ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ঢালিউডের জনপ্রিয় এই নায়কের মা নীলা চৌধুরীর দাখিল করা নারাজি আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। খারিজ হওয়ার সংবাদ শুনে সংক্ষুব্ধ সালমান শাহর মা। গণমাধ্যমকে যুক্তরাজ্য থেকে তিনি জানালেন- তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন।
পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত রবিবার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে এ আবেদন জমা দেন সালমান শাহর মা নিলুফার চৌধুরী ওরফে নীলা চৌধুরী। বিকেলে সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
নারাজি আবেদনে সালমানের মায়ের দাবি- সালমান শাহর অপমৃত্যুর মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত না করে আসামিপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
খারিজ আদেশ প্রসঙ্গে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী বললেন- ‘আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করব। আমৃত্যু লড়ে যাব।’
সালমানের মায়ের দাবি- পিবিআইয়ের কাছ থেকে সব কাগজপত্র তিনি পাননি। এরপরও নারাজি দাখিল করেছেন। তিনি অসুস্থ। সালমানের এই ইস্যু নিয়ে তাঁকে অহেতুক পেরেশানি করা হচ্ছে।
এত সহজে ছেড়ে দেব না মন্তব্য করে সালমানের মা বলেন- ‘আমার ছেলে মারা গেছে ২৫ বছর আগে। সেই থেকে আমরা লড়ে যাচ্ছি। আমার স্বামী বিচার চেয়ে মামলা করেছিলেন, কিন্তু তিনি বিচার দেখে যেতে পারেননি। আমার জীবদ্দশায় এই মামলা বন্ধ হবে না। আমি মরে গেলেও এই মামলা চলবে। কাউকে না কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাব। এত দিন পর্যন্ত সালমানের বিচার নিয়ে যা কিছু হয়েছে, সবকিছু প্রমাণ করে সালমান শাহ কোনোভাবেই আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহর অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঢাকার সিএমএম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৬০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, সালমান শাহকে খুন করা হয়নি। তিনি আত্মহত্যা করেন। এ আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণ ছিল।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
সিআইডির প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সালমান শাহর বাবা ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হয়। এ আদেশের প্রায় ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এতেও সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন আবেদন করেন নীলা চৌধুরী। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।