পাঠক নেই, তাকে তাকে অলস পড়ে আছে বই
স্টাফ রিপোর্টার
পুরো পাঠাগার চকচকে-তকতকে। আলো ঝলমলে পরিবেশে তাকে তাকে সাজানো বই। কিন্তু কোনো পাঠক নেই।
গণগ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, এ কে মেমোরিয়াল কলেজ ক্যাম্পাসে গণপূর্ত অধিদপ্তর ২০১৩ সালে গণগ্রন্থাগারটির নির্মাণকাজ শেষ করে। সব কাজ শেষ হওয়ার পর ২০১৫ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পাঠাগারে ৭ হাজার ৬৭৯টি বই রয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৪০৬টি বাংলায় ও ২১৩টি ইংরেজিতে প্রকাশিত বই রয়েছে। এই পাঠাগারে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, শিশুতোষ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, শরীরচর্চা, মনোবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, ভূগোল ও দর্শনসহ অসংখ্য বিষয়ের বই তাকে তাকে সাজানো রয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলকে নিয়ে বিভিন্ন লেখকের বইও রয়েছে। প্রতিদিনের সংবাদপত্রও সেখানে থাকে।
জামালপুরের কবি–সাহিত্যিক সাযযাদ আনসারী প্রথম আলোকে বলেন, বই পড়ার আগ্রহ থেকে ক্রমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। এটা উদ্বেগের বিষয়। বইয়ের সঙ্গে পাঠকের আত্মিক সম্পর্ক তৈরি করতে সবার নিজ জায়গা থেকে কাজের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তির যুগে বেশির ভাগ পাঠাগারে এখন আর পাঠকের দেখা মেলে না। অবসর সময়ে বই বা খেলাধুলার পরিবর্তে তরুণ প্রজন্মের হাতে হাতে এখন মুঠোফোন। যে মুঠোফোন ছিল প্রযুক্তির আশীর্বাদ, সেই মুঠোফোন যেন এখন অভিশাপ। ফলে বইপ্রেমীদের ফের পাঠাগারে ফেরাতে সামাজিক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই পড়তে আগ্রহ তৈরির জন্য উৎসাহ দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।

উপজেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. আবদুর রশীদ জানান, পাঠাগার চালুর পর কয়েক বছর ভালোই পাঠক ছিল। কিন্তু করোনার কারণে পাঠাগারের সব কার্যক্রম টানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল। ফলে পাঠাগারে পাঠকে ভাটা পড়েছে। পাঠকদের ফেরাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচার চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠাগারটি পাঠকদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠবে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার প্রথম আলোকে বলেন, পাঠাগার মূলত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর থাকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাঠাগার বন্ধ ছিল। ফলে পাঠাগারটি প্রায় পাঠকশূন্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ফলে পাঠক ফেরাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সামাজিক প্রচারমূলক উদ্যোগও নেওয়া হবে।