ইতিহাসবিদ সৈয়দ আব্দুল্লাহর ইন্তেকাল : দাফন সম্পন্ন
সময় সিলেট ডেস্ক
বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ, শেকড় সন্ধানী ইতিহাস গবেষক সৈয়দ আবদুল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন। শনিবার ভোররাতে তিনি ঢাকার ধানমন্ডির বাসায় ইন্তেকাল করেন।
দীর্ঘদিন ধরে জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসারত ছিলেন। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে নাত নাতনিসহ অসংখ্য পাঠক ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। শনিবার বাদ যোহর নিজবাড়ি হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার উত্তরসুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দাফনে আলেম উলামা, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক সংবাদিকসহ কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সৈয়দ আধুনিক বাংলা ইসলামি সাহিত্যের অন্যতম বাক নির্মাতাদের অন্যতম তিনি। মাসিক মদীনার তিন যুগের জনপ্রিয় লেখক ও গবেষক। বৃহত্তর সিলেটের সমকালীন কীর্তিমান মনীষীদের তিনি অন্যতম। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান নিয়ে এই বরেণ্য ইতহাস গবেষকের লেখা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তিনি ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসাবে কাজ করেন। পাশাপাশি লিখেছেন বঙ্গবন্ধু সহ জাতীয় অনেক বিষয়ের উপর গবেষণাগ্রন্থ।
সিলেট ও তরফ (হবিগঞ্জের প্রাচীন নাম) অঞ্চল নিয়ে ব্যাপক কাজ করেছেন। তরফ সাহিত্য পরিষদের মতো মহীরুহের ন্যায় প্রতিষ্ঠান তিনি গড়ে তুলেছেন। প্রান্তিক ইতিহাস থেকে শেকড়ের সন্ধানে তার বিচরণ পলাশির পান্তর পর্যন্ত। পলাশি নিয়ে তারঁ লেখা গ্রন্থ উভয় বাংলায় সমাদৃত। জাতীয় অধ্যাপক দেওয়ান আজরফ থেকে শুরু করে কবি আল মাহমুদ পর্যন্ত বহু খ্যাতিমান লেখকরা সৈয়দ আব্দুল্লাহর গবেষনাকর্ম ও সাহিত্য সাধনা নিয়ে লেখালেখি করেছেন।
তরফরত সৈয়দ আব্দুল্লাহ পেশায় ছিলেন সরকারী চাকুরীজীবী। পেনশনের সমস্ত টাকা দিয়ে তিন খন্ডে প্রকাশ করেন আকাবিরে দেওবন্দ এর জীবনী গ্রন্থ ‘মুসলিম মনীষা’। গড়ে তুলেন গ্রামীণ জনপদে পাঠাগার। অবসরে গড়ে তুলেছেন “জামেয়া মাহমুদীয়া হামিদনগর” ও ‘জামেয়া মোবারকীয়া উত্তরসুর’ এর মতো কওমী মাদরাসা। মফস্বলের সর্ব বৃহৎ গ্রামীণ জনপদের বইমেলা খ্যাত ঐতিহ্যবাহী “বাহুবল একুশে বই মেলা”র তিনি অন্যতম রূপকার ও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তরফ সাহিত্য পরিষদের আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন।