সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা দখলের প্রতিবাদে সিলেটে মানববন্ধন
সময় সিলেট ডেস্ক
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের তাড়ালিয়া গ্রামে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মদদে এক সংখ্যালঘু ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে হামলা ও মামলার প্রতিবাদে সিলেটে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৮ জুন) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা’র ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান প্রান্তিকের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেটের সমন্বয়ক খায়রুল হাছান, জেলা বাসদের সমন্বয়ক আবু জাফর, জেলা সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমন, ভুক্তভোগী সুচিত্রের সহপাঠী শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী প্রণয় কান্তি, তাড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ ঘোষ, আত্মীয় নিপেশ চন্দ্র ঘোষ।
আরও বক্তব্য দেন— যুব ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দাস খোকন, কেন্দ্রীয় সদস্য মতিউর রহমান, শিক্ষক নিরঞ্জন সরকার, সংগঠক মাহবুব রাসেল, নাট্যকর্মী রিপন চৌধুরী, উত্তম কাব্য, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাইমিনুল ইসলাম মাহিন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল সিলেটের সভাপতি বিশ্বজিৎ শীল, ছাত্র ফ্রন্ট নগর শাখা নেতা নিশাত সানী, শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী রাজু শুত্রদর, নিপুল দাশ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন— ‘গত দুই বছর ধরে নবীগঞ্জের তাড়ালিয়া গ্রামের সুধীর গোপ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্যেন্দ্র গোপের পারিবারিক কৃষিজমি দখলের চেষ্টা করছেন স্থানীয় জহুর আলী। জায়গা দখল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল তাকে সহযোগিতা করছেন। এঘটনায় সুধীর গোপের ছেলে শাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী সুচিত্র গোপ ও তার পরিবারের ওপর একাধিকবার হামলা হয়। এসব হামলার ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করলেও চেয়ারম্যান মুকুল সালিশে তা মিমাংসা করবেন বলে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। কিন্তু পরে তিনি তা সমাধান না করে উল্টো হামলায় মদদ দেন।’
বক্তারা আরও বলেন— ‘সর্বশেষ গত ৩ জুন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ফের সুধীর গোপের বাড়ি হামলা করা হয়। এ ঘটনায় নারী’সহ অন্তত ৩ জন আহত হন। তবে এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে প্রথমে মামলা গ্রহণ করেনি পুলিশ। কিন্তু এর মধ্যেই হামলাকারীরা সুচিত্র ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর মামলা দায়ের করে। এর পরদিন পুলিশ সুচিত্রদের মামলা গ্রহণ করে। তবে মামলার মূলহোতারা এলাকা দাপিয়ে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো উদ্যোগ নেই।’
বক্তারা বলেন— ‘আমাদের সমাজের সূর্যসন্তান হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জায়গা দখল করতে একজন জনপ্রতিনিধি অন্যদের প্রত্যক্ষভাবে মদদ দিচ্ছেন। যা আমাদের মর্মাহত করে। এটি আসলে একটি চক্র। যারা সংখ্যালগুদের জায়গা দখল করতে সব সময় ওৎ পেতে থাকে। সুযোগ পেলেই তারা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্যদিকে পুলিশ ভুক্তভোগীদের পাশে না দাঁড়িয়ে হামলকারীদের পক্ষ নিয়েছে।’
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বক্তারা বলেন— ‘অবিলম্বে সুচিত্র গোপ ও তার পরিবারের ওপর করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে ও যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করায় নবীগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি করেন বক্তারা।’
এসব দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানান বক্তারা।