জায়েদ খান প্রসঙ্গে মৌসুমীর মন্তব্যের পর যা বললেন ওমর সানী
বিনোদন ডেস্ক
চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে ঘিরে ঘটে যাওয়া ওমর সানী-জায়েদ ইস্যুর সত্যতা জানতে মৌসুমীকে অসংখ্যবার ফোন ও খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া দেননি তিনি। খবর ছড়িয়ে পড়ার ২৬ ঘণ্টা পর সোমবার সকালে হঠাৎ একটি অডিও বার্তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কে বা কারা ওই অডিও বার্তা ফেসবুকে ছড়িয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গতকাল দুপুর পর্যন্তও মৌসুমীকে তাঁর নম্বরে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ছড়িয়ে পড়া অডিওতে জায়েদের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৌসুমী। অন্যদিকে, মৌসুমীর কণ্ঠের সেই অডিও শুনে ওমর সানীও বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছেন, তিনি যা বলেছেন, সব সত্য। ডিস্টার্ব করার যথেষ্ট প্রমাণ তাঁদের কাছে আছে।
২ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের সেই অডিও বার্তায় মৌসুমীকে বলতে শোনা যায়— ‘আমি মনে করি, আমার প্রসঙ্গ টানার কোনো প্রয়োজনীয়তাই ছিল না। আমি জায়েদকে অনেক স্নেহ করি। সে আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে। আমাদের মধ্যে যতটুকু কাজের সম্পর্ক, সেটা অনেক ভালো সম্পর্ক। সেখানে আমাকে অসম্মান করার প্রশ্নই ওঠে না এবং ওর মধ্যে আমি গুণ ছাড়া অপ্রীতিকর কিছুই দেখি না। কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, সেটা আমি দেখিনি। ও ভালো ছেলে। সে আমাকে কখনোই অসম্মান করেনি।’
স্ত্রী চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে খারাপ আচরণের জেরে ওমর সানী চড় মেরে বসেন জায়েদ খানকে। খল অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক ডিপজলের ছেলের বিয়েতে গত শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্রের একাধিক শিল্পী। চড় খাওয়ার পর জায়েদ পিস্তল বের করে ওমর সানীকে মারার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অডিও বার্তা শুনেছেন চিত্রনায়ক স্বামী ওমর সানীও। এরপর যোগযোগ করা হয় তাঁর সঙ্গে। গণমাধ্যমকে ওমর সানী বলেন— ‘বিষয়টা হচ্ছে, মৌসুমীকে তো আমার সম্মান করতে হবে। আমাদের দুটি সন্তান আছে, ঘরে ছেলের বউ আছে। এটুকু বলতে পারি, জায়েদ ডিস্টার্ব করে কি না, সে বিষয়ে আমার ও আমার ছেলের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। আমি চাই না কাউকে লাঞ্ছিত করা হোক। এটার (বাবা মিথ্যাচার করেছে কি না) সম্পূর্ণ ভালো উত্তর দিতে পারবে আমার ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীন ও মেয়ে ফাইজা আবিহা। তারা বলুক, তাদের আমি বলার স্বাধীনতা দিয়েছি এ ব্যাপারে। পরিবারের প্রতি আমার অবশ্যই সম্মানবোধ আছে। আমার স্ত্রী কী বলেছে, তা আমি দেখেছি। কিন্তু আমাদের কাছে জায়েদ খানের ডিস্টার্বের এভিডেন্স আছে।’
কথায় কথায় ওমর সানী জানান— দেড় মাসের মতো তাঁরা দুজন এক ছাদের নিচে একই বাড়িতে থাকলেও তাঁদের দেখা হয় না। কথা হয় না। ওমর সানী বলেন— ‘একই ছাদের নিচে বসবাস করেও গত দেড় মাসের ওপর হয়ে গেছে আমাদের ফোনেও যোগাযোগ নেই। একই বাড়িতে আছি। চেষ্টায় আছি। তাকে আমি সম্মান করেই কথা বলব, কারণ সে আমার সন্তানের মা, আমার স্ত্রী। তাই এর চেয়ে বেশি কথা বলতে আমি পারব না।’
ওমর সানী এও বলেন— ‘আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি আমার পরিবারকে। ২৭ বছর ধরে শ্রদ্ধা করে এসেছি এবং বাংলাদেশের মানুষও জানে। আমার দুর্ভাগ্য, ২৭ বছর পরে এসে আমার শ্রদ্ধার জায়গাটায় কী গুনাহ করলাম, তা জানি না। যা–ই হোক, আল্লাহ মহান, আমি যে কথাগুলো জায়েদ খান সম্পর্কে বলেছি, আমি বারবার একটা কথাই বলেছি, আমার এবং আমার ছেলে ফারদিনের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ এভিডেন্স আছে। আমার পরিবারের পাঁচজন সদস্য—আমি, মৌসুমী, আমার ছেলে ফারদিন, বউমা আয়েশা, মেয়ে ফাইজাসহ আরও লোকজন আছে। তারা স্ট্যান্ডবাই আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আমার আত্মীয়স্বজন আছে। সবাই আছে। এ ব্যাপারে আমার যা বলার বলে ফেলেছি।’
মৌসুমীর বক্তব্যের বিপরীতে তাঁকে অসম্মান করা হয়— এমন কোনো বক্তব্য দেবেন না জানিয়ে ওমর সানী বলেন— ‘আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধা জানাই আমার স্ত্রীকে, সম্মান জানাই আমার ছেলে–মেয়েকেও। আমি মৌসুমীর ব্যাপারে বাজে কোনো মন্তব্য করব না। আমি মনে করি না।’
মৌসুমীর বক্তব্যের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে সানী বলেন— ‘কিন্তু এগুলোর উত্তর আমার এবং আমার ছেলের কাছে আছে, জায়েদ খানের ব্যাপারে। এর যথেষ্ট প্রমাণ ফারদিন ও ফাইজার কাছে আছে। ফাইজা ও ফারদিন বাকি উত্তরগুলো দেবে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে তার মায়ের সঙ্গে কী উত্তর দেবে, আর তোমাদেরই (সাংবাদিকদের) কী উত্তর দেবে। আমি এ বিষয়ে নীরবতা পালন করলাম।’