ঈদের আগে নতুন ঘর পেলো মাধবপুরের ১৭ গৃহহীন পরিবার
মাধবপুর সংবাদদাতা
না ছিল কোনো স্থায়ী ঠিকানা, না ছিল নিজের কোনো জমি বা থাকার মতো ঘর। কারো ঘর থাকলেও ছিল জীর্ণ কুটিরে কষ্টের দিন-রাত্রি। এখন আর সেই জীর্ণ কুটিরে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না গৃহহীন মানুষগুলোর। শুধু ঘর নয়, নিজের নামে ২ শতক জমির মালিকানা হয়েছে তাদের। পূরণ হয়েছে অপ্রত্যাশিত স্বপ্ন।
ঈদের আগের দিন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের ১৭ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার স্বপ্নের বাড়িতে উঠেছে।
উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়— যারা ঘর পেয়েছেন তারা জীবন সংগ্রামে অসহায় ও মানবেতর দিন যাপন করতেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহার এসব বাড়ি পেয়ে দূর্বীষহ জীবনের ইতি টেনে নতুন জীবনের সঞ্চার হয়েছে। কল্পনাও করেননি এরকম রঙিন টিনের পাকা ঘর পাবেন। যেখানে জীবন কেটেছে অন্য বাড়ির বারান্দায় কিংবা মেঝেতে। আজ উঠেছেন পাকা ঘরে।
ঘর পেয়ে নিজেদের মতো সাজিয়ে নিচ্ছেন এসব ঘর। নতুন বাড়িতে অনেকেই গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, সবজি চাষ করে সুন্দর জীবনের গল্প বুনছেন তারা।
উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের বরুড়া গ্রামে আশ্রয়নের ঘর পাওয়া প্রতিবন্ধী মাসুক মিয়া জানান— ‘খুব কষ্টে ছিলাম ভাই। নিজের কোন ঘর ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতো সুন্দর ঘর দিবে, কখনো কল্পনাও করিনাই।
একই কথা বলেন— জীবন পাল, সাবিনা বেগম ও সুলেমান মিয়া। তারা বলেন— সরকার ইউএনও স্যারের মাধ্যমে ঘর কইরা দিছে। ঘরের সঙ্গে টয়লেট, টিউবওয়েল ও কারেন্ট দিয়েছে। এরকম পাকা ঘর পামু কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই প্রধানমন্ত্রীকে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়— তৃতীয় পর্যায় এই ১৭ টি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার পেয়েছেন সুদৃর্শ্য পাকা ঘর। এসব উপকারভোগীদের ঘর শনিবার (৯ জুলাই) সকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রধান অথিতি হিসাবে উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন।
এ সময় চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন— উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রহম আলী, চৌমুহনী খুর্শিদ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহন মিয়া, তহিশলদার কুতুব উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজহার উদ্দিন ভূইয়া, সমাজ সেবক আব্দুল আলীম মীর বাদল, আক্তার হোসেন মেম্বার, বকুল মেম্বার, সাবিনা ইয়াছমিন রত্মা মেম্বার প্রমুখ।
এসব উপকারভোগীদের জন্য নির্মিত আবাসন স্থাপনায় রয়েছে মান সম্মত টয়লেট, জানালা, দু’কক্ষ বিশিষ্ট থাকার কক্ষ, রান্না ঘর, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা আর সুন্দর বারান্দা। সবুজ শ্যামল পরিবেশে বাড়িগুলো করা হয়েছে বসবাসের নিরাপদ ঠিকানা। প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক ও আশ্রয়হীন ও দুর্ভোগ পোহানো মানুষগুলো উঠেছেন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এসব স্বপ্নের বাড়িতে।
মাধবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন বলেন— উপজেলায় তৃতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর মুজিববর্ষে উপহার হিসেবে ১৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পাচ্ছেন। তৃতীয় ধাপে এসব গৃহহীনকে মালিকানা হস্তান্তর করে বাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার সমস্ত কাজ সম্পন্ন করেছি। এটা প্রধানমন্ত্রীর অসহায়দের গৃহহীনদের জন্য ঈদ উপহার। স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক চাহিদা ও কর্মসংস্থানের বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভালো থাকার নিশ্চয়তা তৈরি করতে। এজন্য সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরও স্থায়ী নিরাপদ ঠিকানা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।