সিলেটে আরো ২ সিএনজি স্টেশন বন্ধ : মৌলভীবাজারের বন্ধ ৩টি চালু
অতিথি সংবাদদাতা

এমজেএইচ জামিল : লোড শেষ হওয়ায় সিলেট নগরীতে বন্ধ হলো আরো ২টি সিএনজি স্টেশন। জুলাই মাসের নির্ধারিত লোড শেষ হওয়ার কারণে বুধবার সকাল থেকেই আখালীয়াস্থ শাহজালাল সিএনজি স্টেশন ও গোপালের ইন্ডিপেডেন্ট সিএনজি স্টেশন বন্ধ করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার ঠিক একই কারণে শিবগঞ্জ ও সুবিদবাজারস্থ আরো ২টি সিএনজি স্টেশন বন্ধ করা হয়। এক সাথে নগরীর ৪টি সিএনজি স্টেশন বন্ধ হওয়ায় চালু থাকা স্টেশনগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। দেড় থেকে ২ ঘন্টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস নিতে হয় চালকদেরকে। ১ আগস্ট থেকে মাসের নতুন লোড নিয়ে ফের চালু হবে স্টেশনগুলো। ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্টেশনগুলোকে বন্ধ থাকতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে হার্ডলাইনে যাচ্ছেন সিএনজি স্টেশন মালিকগণ। বুধবার রাতে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ এক জরুরী বৈঠকে বসেন। উক্ত বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিলেট জেলা প্রশাসকের সাথে এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠকের পর করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত এসোসিয়েশনের একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান— সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চালু থাকলে সব স্টেশন এক সাথে চালু থাকবে। আর বন্ধ হলে আমরা সব স্টেশন বন্ধ করে দিবো। এক সাথে নগরীর ৪টি স্টেশন বন্ধ হওয়ায় বাকী স্টেশনে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। হাজার হাজার যানবাহন লাইনে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছে। বুধবার বিভিন্ন স্টেশনে যানবাহন চালক-শ্রমিক কর্তৃক স্টেশন কর্মচারীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে চালু থাকা স্টেশনগুলো নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। পুলিশী নিরাপত্তা ছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে স্টেশন চালু রাখা কঠিন হয়ে যাবে। এরপরও জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠকের পর আমরা করনীয় ঠিক করবো।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলায় নির্ধারিত লোড শেষ হওয়ায় ৩টি স্টেশন বন্ধ করা হয়। একই কারণে বন্ধ হয়ে পড়ে অপর একটি স্টেশন। এক সাথে ৪টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের বন্ধ হওয়ায় সিএনজিচালিত পরিবহনগুলোর ভাড়া বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় মঙ্গলবার রাতে মৌলভীবাজার সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় ৩টি স্টেশন চালুর নির্দেশনা দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে ফের চালু হয় বন্ধ থাকা দুটি স্টেশন।
জালালাবাদ গ্যাস লিমিটেড এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়— গ্যাস বিক্রির নির্ধারিত বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হয়ে ওভারলোডেড হয়ে পড়ায় মৌলভীবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ৩ টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। জালালাবাদ গ্যাস লিমিটেডের নির্দেশে গত ১৮ জুলাই থেকে জেলার ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেন স্ব-স্ব মালিকরা। এগুলো হলো: শহরের কুসুমবাগ এলাকার সাজ্জাদুর রহমান ফিলিং স্টেশন, মাতারকাপন এলাকার এমএস ফিলিং স্টেশন এবং রাজনগর উপজেলার ডেল্টা ফিলিং স্টেশন।
জানা যায়— জেলার তিনটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলাজুড়ে তীব্র জ্বালানি সংকটে পড়ে গ্যাসচালিত পরিবহনগুলো। ভাড়া বাড়িয়ে দেয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টমটমসহ অন্যান্য পরিবহনের চালকরা। ফলে চরম জনভোগান্তি দেখা দেয়।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান গণমাধ্যমে জানান— বন্ধ হওয়া তিনটি সিএনজি গ্যাস ফিলিং স্টেশন বুধবার থেকে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সিএনজিচালিত সকল পরিবহন ও অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার জন্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
জালালাবাদ গ্যাস টি এ্যান্ড ডি সিস্টেম লিমিটেড মৌলভীবাজার আঞ্চলিক বিতরণ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. ছানোয়ার হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন— মৌলভীবাজারে ৭টি সিএনজি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে ৩টি লোড শেষ হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় বন্ধ ২টি স্টেশন চালু করা হয়েছে। তাদের লোডের হিসেব আগামী আগস্ট মাসের ২৭ তারিখে শেষ হবে। এই সিস্টেমে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে।
জালালাবাদ গ্যাস টি এ্যান্ড ডি সিস্টেম লিমিটেড হবিগঞ্জ আঞ্চলিক বিতরণ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. খালেদ গণি বলেন— লোড শেষ হওয়ায় হবিগঞ্জের ৪টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। তবে জেলা শহরে ৪টি স্টেশন চালু রয়েছে। এরমধ্যে ২টি স্টেশনের পর্যাপ্ত লোড রয়েছে। ফলে হবিগঞ্জে তেমন প্রভাব পড়ার সুযোগ নেই। এরপরও পরিস্থিতি কঠিন হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।




