কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাট: জলাবদ্ধতায় হাজার বিঘা জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সময় সংগ্রহ
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ী এলাকায় এলজিইডির সড়কের কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাট করার ফলে নিজ দলইকান্দি ক্ষেতের বিস্তীর্ণ মাঠ ডুবে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান— গত ২ মাস থেকে পানি নিষ্কাশনের কালভার্ট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে হাজারো বিঘা ক্ষেতের জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অপর দিকে বন্যার পানি ও বৃষ্টির পানি জমে ব্যাপক জলাদ্ধতার কারণে বিস্তৃীর্ণ ক্ষেতের মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় নিজ গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পর্যন্ত হাঁটু পানি ও কোমর পানি বিরাজ করায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। এছাড়া আব্দুল হক মহিলা দাখিল মাদ্রাসা ও এর আশপাশে অবস্থিত আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে নিজ গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা ও ক্লাসরুম পর্যন্ত জলাবদ্ধতার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করছে। অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী ভয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুল কবির জানান।
তারা বলেন— নিজ দলইকান্দি গ্রামের বিস্তীর্ণ ক্ষেতের মাঠসহ আশপাশ এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এলজিইডির জনগুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়কের কালভার্টের মুখ বেআইনীভাবে মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা আরো বলেন— গত বছর এলজিইডির কালভার্টের মুখ মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কালভার্টের মুখের মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। কিন্তু আড়াইমাস পূর্বে আবারো স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এলজিইডির পাকা সড়কের কালভার্টের মুখসহ আশপাশের জমি মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশনে পথ বন্ধ করে দিলে ক্ষেতের বিশাল মাঠসহ আশপাশ এলাকা পানিতে ডুবে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় নাগরিক জীবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটছে।
জলাবদ্ধতার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জিকে স্থানীয়ভাবে জানানোর পর তিনি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বানীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন ও ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্করকে নির্দেশ দেন। ইউপি চেয়ারম্যানদ্বয় এ নিয়ে যারা মাটি ভরাট করেছেন তাদের সাথে বার বার কথা বলার পরও তারা পানি নিষ্কাশনে কোন ধরনের সহযোগিতা না করে উল্টো দুইদিন পূর্বে মাটি ভরাট করা কালভার্টের মুখে টিনশেডের ঘর নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পাঠদান অব্যাহত রাখাসহ হাজারো বিঘা ফসলি জমি চাষাবাদের সুবিধার্থে কালভার্টের মুখ থেকে মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সুগম করার জন্য দ্রুত সিলেটের ও স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।