সিডরের ১৫ বছর : শরণখোলায় নদী শাসনের দাবি স্বজনহারাদের
সময় সিলেট ডেস্ক

উপকূলীয় বাগেরহাটের শরণখোলায় ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরে ঘটে যায় মহাপ্রলয়। ‘সিডর’ নামের সেই ভয়ঙ্কর দানবের ছোবলে সাউথখালীতেই প্রাণ হারায় ছয় শতাধিক মানুষ। সবমিলিয়ে এই উপজেলায় সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটে সেদিন। দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণে বলেশ্বর নদ থেকে উঠে আসা আকাশচুম্বী জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, অসংখ্য গাছপালা, গবাদি পশু, সহায়সম্বল।
সিডরে স্বজন আর সম্বলহারা মানুষের সেইদিন থেকে দাবি ছিল একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের। বলেশ্বর নদের তীরে উঁচু বাঁধ নির্মাণের দাবিতে উপজেলাবাসী নানা আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি সরকারের উচ্চমহলে আবেদন জানান। সিডরের পর দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পরে টেকসই উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি।
বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) এই কাজ বাস্তবায়ন করছে ‘সিএইচডব্লিউই’ নামে চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তিন বছর মেয়াদের সেই কাজ সাত বছরেও শেষ হয়নি। কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। তারপরও দাবি পুরণ হওয়ায় মানুষ একদিকে যেমন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। অন্যদিকে নদী শাসন না করে বাঁধ নির্মাণ করায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন অংশে ভাঙন শুরু হওয়ায় মানুষের মাঝে নতুন করে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
নদী শাসনের দাবিতে ১৫তম সিডর দিবসের দিনে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) শরণখোলার মৃত্যুপুরী খ্যাত সাউথখালীর গাবতলায় মানববন্ধন ও নিহতদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘নদী শাসন আন্দোলন কমিটির’ ব্যানারে বলেশ্বর নদের তীরে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বলেশ্বর নদের তীরের প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকার ভাঙনকবলিত ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি পয়েন্টে দ্রুত নদী শাসনের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন— শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রায়হান উদ্দিন শান্ত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান, শিক্ষক শহিদুল ইসলাম খান, যুবলীগ নেতা ইরমান হোসেন রাজীব, পলাশ মাহমুদ, ইউপি সদস্য জাকির হোসেন হাওলাদার, রিয়াদুল পঞ্চায়েত, জাহাঙ্গীর খলিফা, আল আমীন খান, সাবেক মেম্বর সাইফুল ইসলাম হলিম শাহ প্রমুখ।
মানববন্ধনে স্বজনহারা শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন। পরে সিডরে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।




