দুবাইয়ে আবাসন খাতে বাংলাদেশী কালোটাকা
সময় সংগ্রহ
করোনা মহামারির ১৮ মাসে বাংলাদেশী নাগরিকরা দুবাইয়ের আবাসন খাত ও বাড়ি নির্মাণে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছেন। দুবাই একটি আধুনিক শহর। এটা বিলাসবহুল কেনাকাটা, অতি আধুনিক স্থাপত্য ও প্রাণবন্ত রাত্রিকালীন দৃশ্যের জন্য পরিচিত। এ শহরে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় ধনী ও দুর্নীতিবাজ বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ বেড়েছে। দুবাই কর্তৃপক্ষের সরকারি দলিল ও বিভিন্ন সংবাদপত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন— দুবাইয়ে বিনিয়োগ করা অধিকাংশ অর্থ হলো কালোটাকা। সঠিক সরকারি নীতি মেনে এসব অর্থ দুবাইয়ে পাঠানো হয়নি। আরব আমিরাতের মুদ্রায় এ বিলাসবহুল শহরটিতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ হচ্ছে ১২৪ মিলিয়ন ইউএই দিরহাম। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা।
এসব বিশেষজ্ঞদের মতে— দুবাইয়ে বিনিয়োগ করা বিপুল অর্থ, মূলত কয়েকটি বিষয়কে স্পষ্ট করে। যেমন: করোনার সময়ও বাংলাদেশের অনেক মানুষের হাতে বিপুল অর্থ ছিল। এ সময় ওই সব ধনী বাংলাদেশিরা মনে করেছেন যে বাংলাদেশে তাদের সম্পদ নিরাপদ নয়। এ কারণে তারা ‘সেকেন্ড হোম’ বা দ্বিতীয় কোনো দেশে নিরাপদ বিনিয়োগ করেছেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে অবস্থানের জন্য অনুমতি নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা দুর্নীতিগ্রস্ত অতীত জীবন থেকে বিলাসবহুল জীবনে পদার্পণ করেছেন।
তারা বলেন— দুবাইয়ে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে গোপনীয়তা এবং সহজে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগের কারণে তারা তাদের কালোটাকাকে ওই শহরে বিনিয়োগ করেছে।
দুবাইয়ের বাংলাদেশী কমিউনিটি সূত্র জানিয়েছে— ‘দুবাইয়ের আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় ক্রেতারা হলেন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং আমলা।’ এখন এসব বাংলাদেশী নাগরিক এবং তাদের পরিবারের জন্য পাচারকৃত অর্থের নিরাপদ স্থান হতে যাচ্ছে এ আধুনিক শহর।
দুবাই ভূমি বিভাগের তথ্য উল্লেখ করে সেখানকার দু’টি বিখ্যাত সংবাদপত্র ‘ইংলিশ টেলার রিপোর্ট’ ও ‘আরবি ইমারাত আল ইউম’ জানিয়েছে— ‘বাংলাদেশের ধনী ব্যক্তিরা দুবাইয়ে ১২৩ মিলিয়ন দিরহাম মূল্যের বাড়ি ক্রয় করেছেন।’
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে— দুবাইয়ের আবাসন খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশীদের। এরপর ১১৭. ৬৭ মিলিয়ন দিরহাম বিনিয়োগ করে নেদারল্যান্ডস দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। এছাড়া তৃতীয় স্থানে আছে সুইজারল্যান্ড। তাদের বিনিয়োগ হচ্ছে, ১১১.৫ মিলিয়ন দিরহাম। তবে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দুবাইয়ে বিনিয়োগ করা এসব ধনী বাংলাদেশীদের কোম্পানি বা ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
সূত্র : এরাবিয়ান বিজনেস