জাহাজ নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব
সময় সিলেট ডেস্ক
বাংলাদেশি দূতকে তলব করা নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে— ‘এমন ঘটনা ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
রাশিয়ার জাহাজ উরসা মেজরকে বাংলাদেশের বন্দরে প্রবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে মস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করেছে দেশটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়— মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে মঙ্গলবার তলব করা হয়। এ মাসের শুরুতে রাশিয়ার কয়েক ডজন জাহাজ নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ। এসব জাহাজ পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল। এ কারণে বাংলাদেশের জলসীমায় এমন জাহাজ প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
বাংলাদেশি দূতকে তলব করা নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে— ‘এমন ঘটনা ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পারমাণবিক শক্তি বিষয়ক সংস্থা রোসাটম বর্তমানে বাংলাদেশে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এই কেন্দ্রটির ২০২৪ সালে কার্যক্রম শুরুর কথা রয়েছে। মস্কোর প্রতি ঢাকা অনুরোধ করেছে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোনো জাহাজ যেন ব্যবহার করা না হয়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল ‘উরসা মেজর’ নামে রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজের। তবে তার আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জানায় যে ওই জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়। এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা ৩’ জাহাজ। রং ও নাম বদল করে তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজটি রূপপুরের পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে, যা প্রকৃতপক্ষে ‘স্পার্টা ৩’ এর সনদ নম্বর। যাচাই করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটি বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয় বাংলাদেশ।
ফলে অন্য উপায় অবলম্বন করে জাহাজের পণ্য খালাস করে তা পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। জাহাজটি বাংলাদেশে ভিড়তে না দিলে সেটি ভারতের বন্দরে গিয়ে পণ্য খালাসের চেষ্টা করে। তবে সেখানেও তা সম্ভব হয়নি। এরপর জাহাজটির চীনের দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি যায়নি।
উরসা মেজর জাহাজটি বঙ্গোপোসাগরের ভেসে বেড়াচ্ছে এখনও। গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টিলিজেন্স মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটের থেকে সর্বশেষ হালনাগাদ এ তথ্য জানা গেছে।
ভারতের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে রুশ জাহাজটি বঙ্গপোসাগরের বাংলাদেশ অংশে নোঙর অবস্থায় রয়েছে। জাহাজটি ঠিক কোথায় যাবে তা এখনও সুনির্দিষ্ট করেনি।