হবিগঞ্জে যত্রতত্র পার্কিংয়ে বাড়ছে যানজট : জনভোগান্তি
অতিথি সংবাদদাতা
জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ থেকে : হবিগঞ্জ শহরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে যানজট। যত্রতত্র পার্কিং, অদক্ষ কিশোর চালকদের দিয়ে যানবাহন চালানোর কারণে দিন দিন যানজট বেড়েই চলেছে। ঘটছে দূর্ঘটনা। এছাড়াও টমটমের ভাড়া নিয়েও কাটেনি জটিলতা। প্রতিদিনই ভাড়া নিয়ে চালকদের সাথে যাত্রীদের হচ্ছে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি। ফলে একদিকে যানজট অন্যদিকে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যে নাভিশ্বাস করে তুলেছে শহরবাসিকে।
যাত্রীরা বলছেন— কোন রকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যে যার মতো করে যানবাহন চালাচ্ছে। যেখানে সেখানে পার্কিং করছে। যে কারণে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি দূর্ঘটনা ঘটছে। যদিও যানজট নিরসন ও অবৈধ যানবাহন চলাচলরোধে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হবিগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়— ৯.০৫ বর্গ কিলোমিটার আয়াতনের ছোট্র এই পৌরসভায় চলাচলের জন্য ১৩শ টমটমের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ভিন্ন। ১৩শ টমটম চলাচলের অনুমোদন দেয়া হলেও পৌরসভা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে চলাচল করে দ্বিগুণেরও অধিক সংখ্যক টমটম। যে কারণে শহরের প্রধান সড়ক ও বাইপাস সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। যদিও পৌর এলাকায় চলাচলের জন্য বৈধ এবং অবৈধ টমটম চিহ্নিত করতে পৌরসভা অনুমোদিত টমটমগুলোতে হলুদ রং করে দিয়েছে। কিন্তু দেখবালের অভাবে কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই। মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে অবৈধ টমটম আটক করা হলেও কার্যকর কোন সুফল পাচ্ছে না শহরবাসী।
অভিযোগ রয়েছে— নতুন বছরের শুরু থেকেই অধিকাংশ টমটম চালকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে। গত বছর প্রধান সড়ক ভাঙ্গা থাকা ও করোনার কারণে ৫ টাকার জায়গায় ১০ থেকে ১৫ টাকা করে আদায় করা হয়েছিলো। ফলে যাত্রীদের সাথে একের পর এক বাকবিতন্ডাসহ মারামারির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করে শহরের শায়েস্তানগর বাজার থেকে চৌধুরী বাজার এবং চৌধুরী বাজার থেকে পৌর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সরাসরি একজন যাত্রীর জন্য ১০ টাকা, আর উঠানামা ৫ টাকা ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে তাও মানছেন না চালকরা।
তাদের দাবী, বর্তমানে সবকিছুর দাম উর্ধ্বমুখী তাই টমটমে উঠা নামা করলেই জনপ্রতি তাদেরকে ১০ টাকা করে দিতে হবে। যা অযৌক্তি বলে প্রত্যাখ্যান যাত্রীদের।
হাসিবুর রহমান নামে এক কলেজ ছাত্র জানান— টমটমে উঠা নামা করলেই ১০ টাকা করে দিতে হবে এটা অযৌক্তিক। কারণ দিনে অন্তত বেশ কয়েকবার আমাদের টমটমে উঠানামা করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক খবচ হয়ে যায়। এছাড়াও আমাদের (ছাত্রদের) কাছে অনেক সময় ৫ টাকা ভাংতি না থাকলে আমাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণও করে চালকরা। আর যানজট তো রয়েছেই। স্বাভাবিকভাবে যেখানে যেতে ৫ মিনিট সময় লাগে সেখানে যানজটে পড়ে আধা ঘন্টায়ও গন্তব্যে যাওয়া যায় না। ফলে টমটম চালকদের শৃঙ্খলার মধ্য আনা প্রয়োজন।
শোয়েব ঠাকুর নামে এক যুবক জানান— হবিগঞ্জ শহরের যানজট অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যদি অবৈধ টমটম নিয়ন্ত্রন না করা হয় তা হলে যানজট আরো বাড়বে। রহিমা খাতুন নামে এক নারী বলেন— টমটম চালকরা তাদের ইচ্ছে মতো শহরে ভাড়া আদায় করে। তাদের যেন দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন— আমরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে পৌর এলাকার যানজট নিরসনে নানান উদ্যোগ নিয়েছি। অবৈধ টমটমগুলো যাতে করে শহরে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য শহরের টমটমগুলো হলুদ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও ট্রাফিক বিভাগকে সাথে নিয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।