রায়হান হত্যাকাণ্ড : নোমানকে খুঁজছে পুলিশ
সময় সিলেট ডট কম
সময় সিলেট ডেস্ক ::
সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে নিহত হন যুবক রায়হান। পুলিশ হেফাজতে নৃশংস এ হত্যাকা-ের মূলহোতা ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া তা এখন অনেকটা স্পষ্ট। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, নানা তথ্যসহ আলামত বিশ্লেষণে দোষ ওঠছে এই নামকে ঘিরে। তবে এবার আকবরের সাথে আরো একটি নাম যুক্ত হলো আব্দুল্লাহ আল নোমান নামের এক যুবকের।
এখন আলোচিত যুবক রায়হান হত্যার স্পটলাইট এসআই আকবর ভূঁইয়া ও আব্দুল্লাহ আল নোমানকে ঘিরেই। তারা দু’জনই পলাতক রয়েছেন, কোথায় আছেন কেউ জানানে। তবে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহির একাধিক টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে নোমানের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে র্যাব, পিবিআই, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। এই দুই অভিযুক্ত আটক হলেই বেরিয়ে আসবে রায়হান হত্যার মূল রহস্য।
এদিকে, বুধবার রাতে নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকায় নোমানের ভাড়া বাসায় র্যাব অভিযান চালালেও সেখানে তাকে পাওয়া পায়নি। তবে নোমানের গ্রামের বাড়ি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে গিয়ে তার পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি দল। এছাড়া একই দিন এসআই আকবরের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের বেড়তলা বগৈরবাড়ি অভিযান চালায় র্যাব-৯। এ সময় তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে আকবরের ছোটভাই আরিফ ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র্যাব। এ তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
নোমানকে নিয়ে নয়া মোড় : নোমান নামের এক কথিত মফস্বল সাংবাদিককে ঘিরে নতুন মোড় নিয়েছে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত। এই নোমানই যুবক রায়হান হত্যার পরদিন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে এসে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক পাল্টে দেয়। এ কাজে তার সাথে ছিলেন ফাঁড়ির টু আইসি এসআই হাসান উদ্দিন। ইতোমধ্যে তদন্ত টিম ফাঁড়ির সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব ও এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তায় করার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় হাসানকে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে তাকে রাখা হয়েছে কঠোর নজরদারীতে। তবে ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান নিহত হওয়ার দুই দিন পর থেকে পলাতক রয়েছে নোমান।
তার পুরো নাম আব্দুল্লাহ আল নোমান। সিলেটের স্থানীয় একটি অনলাইন পোর্টালের উপজেলা প্রতিনিধি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বুরিডহর গ্রামের মো. ইছরাইল আলীর ছেলে। তার বাবা কোম্পানীগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক। আর মা মোছা. বিলকিস আক্তার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য কর্মী।
সুত্র জানায়, নোমানের সাথে এসআই আকবরের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তারা একজন অপরজনকে খালাতো ভাই বলে পরিচয় দিতেন। বিভিন্ন সময় আকবরের সাথে আড্ডা দিতে দেখা গেছে নোমানকে। মাঝে মধ্যে সেসব আড্ডায় যুক্ত হতেন সদ্য বরখাস্ত হওয়া এসআই হাসানও। গত ১১ অক্টোবরে ভোর রাতে ঘটনাটি ঘটলেও এর দুই দিন পর ফাঁড়ির সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবের ক্ষেত্রে নোমানের নাম ওঠে আসে। এরপর ১৩ অক্টোবর থেকেও নোমান আত্মগোপনে চলে যায়। একই দিন রায়হান হত্যাকা-ের মূল অভিযুক্ত এসআই আকবর ভূঁঁইয়াও পলাতক হন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশিরাফ উল্লাহ তাহের, রায়হান নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি পিবিআই কাজ করছে। এ ঘটনায় আমাদের যার সম্পৃক্ততা পেয়েছি তার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বাকিটা পিবিআই দেখবে। তাদের সাথে এসএমপিও কাজ করছে।