মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুকে জানার বিকল্প নেই: ড. কামাল চৌধুরী
স্টাফ রিপোর্টার :
স্টাফ রিপোর্টার : মহান মুক্তিযুদ্ধের এগারোটি সেক্টর স্মরণে ১১ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হলো ইনোভেটর আয়োজিত ‘জেলা পরিষদ, সিলেট’ বইপড়া উৎসবের। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইনোভেটর’র মুখ্য পরিচালক ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদের সভাপতিত্বে এবং ইনোভেটর সদস্য ঈশিতা ঘোষ চৌধুরী ও সৈয়দা আছিয়া খাতুনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি জাতীয় বাস্তবায়ন পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব কবি ড. কামাল চৌধুরী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেবজিৎ সিংহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল চৌধুরী বলেন- বঙ্গবন্ধুকে জানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে বই। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আর্দশকে হৃদয়ে লালন করতে হলে তার মহাজীবন পাঠের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন- হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-সংগ্রামকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ইনোভেটর এর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠোৎসবের আয়োজন এক যুগান্তকারী ঘটনা। কামাল চৌধুরী বলেন- পঠন-পাঠন ছাড়া তারুণ্যের মনোজগতের বিকাশ সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানার কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি বরেণ্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন- শেখ মুজিব আর বাংলাদেশ এক অভিন্ন স্বত্তা। মুজিব জীবনের নিবিড় পাঠ ছাড়া তাঁকে ভালোবাসা যায় না। তিনি বলেন- মুজিবের রচনাগুলো আমাদের অমূল্য সম্পদ। তরুণদের সেই মুজিব জীবন সমুদ্রকে সততা, নিষ্টা এবং অধ্যাবসায়ের সাথে জানতে হবে। সেজন্য পড়াশোনার, গবেষণার কোনো বিকল্প নেই।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার তার বক্তব্যে মুজিব বর্ষে সিলেট জেলা পরিষদ এর সহযোগিতায় ইনোভেটরের বইপড়ার আয়োজনকে ‘অনন্য’ আখ্যা দিয়ে বলেন, জাতির পিতাকে অধ্যয়ন ছাড়া কোনো শিক্ষা পূর্ণতা পায় না। তিনি বলেন- সবাইকে মুজিব আদর্শ চর্চা করতে হবে নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনোভেটরের নির্বাহী পরিচালক প্রণবকান্তি দেব। সংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরী, প্রতীক এন্দ টনি এবং ইনোভেটর সমন্বয়ক আশরাফুল ইসলাম অনি’র পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান।
আলোচনা শেষে এ বছরের বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ পর্ব পরিচালনা করেন ইনোভেটর এর প্রধান সমন্বয়কারী প্রভাষক সুমন রায়। এসময় স্কুল পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ পাঠক গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সঞ্চিতা দাশ আখিঁ, সেরা পাঠক সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুলতানা জামান ছাজিম, ব্লু বার্ড হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী মুসতারি আহমেদ ইফতি, হযরত শাহজালাল ডি ওয়াই কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মানসুরা সিদ্দিকা, দি এইডেড হাই স্কুলের শিক্ষার্থী আহবাবুর রহমান এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ পাঠক স্কলার্স হোম শাহী ঈদগাহ’র শিক্ষার্থী তাসফিয়া চৌধুরী, সেরা পাঠক মুরারিচাঁদ কলেজের শিক্ষার্থী দেবাঞ্জন দেব রাতুল ও প্রীতিরাজ বণিক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মৌসুমি রানী রায়, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার অর্ণা, বি এ এফ শাহীন কলেজ, শমসেরনগর এর শিক্ষার্থী হাদী হোসেন মাহীর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এ ছাড়া এ গ্রীন ডিজেবল ফাউন্ডেশন এর শিক্ষার্থী তাবাসসুম ফেরদৌসী চাঁদনীকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকে ক্রেস্ট, সনদপত্র, মেডেল এবং বই প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদপত্র প্রদান করা হয়। পুরস্কার বিতরণ পর্ব সমন্বয় করেন ইনোভেটর এর সমন্বয়ক সুমিতা দাশ, সদস্য প্লপা চৌধুরী, নিহাম মতিন, বদরুল ইসলাম শাকির প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হওয়া বইপড়া উৎসবের এ আসরে সিলেটের ১ হাজার ৬ জন শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠে অংশ নিয়েছিল। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।