শামীম-আলীর পকেটে কামরুল: সিলেট জেলা বিএনপির একাংশের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার :
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারির নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ৯ জন্য সদস্য।
আগামী কাউন্সিলে নিজেদের গ্রুপের জয় নিশ্চিত করতে তারা নানা অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন বলেও অভিযোগ তাদের। শামীম-আলীর চক্রান্তে সিলেট জেলা বিএনপি খুব কঠিন সময় পার করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেছেন আহ্বায়ক কমিটির ৯ সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন। তিনি সিলেট জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ককে একজন অদক্ষ ব্যক্তি হিসাবে উল্লেখ করে বলেন- আমরা তাকে সহযোগীতার মাধ্যমে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এক বছরেও তা সম্ভব হয়নি। তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকার পরিবর্তে সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের নির্দেশে চলছেন এবং তাদের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করছেন। এতে সার্বিক কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে এবং তিনি নিজেই একাধিকবার তার অসহায়ত্বের কথাও প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরো বলেন- সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তিনি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২১ সদস্যের একপেশে উপজেলা কমিটি গঠন করেন। প্রতিবাদের মুখে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এসব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া অচলাবস্থা নিরসনে প্রতিটি উপজেলা কমিটিতে ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদের পক্ষের ৬ জন নতুন সদস্যের তালিকা দেয়ার নির্দেশ দেন। কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলনও তালিকা চাইলে আমরা তা সরবরাহ করি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক চক্রান্ত করে মিলন ও বর্তমান আহ্বায়ককে ব্যবহার করে আমাদের ৬ জনের নাম না দিয়ে আবারও নিজের পক্ষের লোকজনের নাম ঘোষণা করেন। এতে জেলা বিএনপি মহাসংকটের মুখে পড়েছে।
এছাড়াও সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক আহ্বায়ক কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে না জানিয়ে একতরফাভাবে বিভিন্ন সমন্বয় কমিটি গঠন করেছেন। উপজেলাগুলোতে নিজেদের লোকজনকে দিয়ে ঘরে বসে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী কাউন্সিলে নিজেদের গ্রুপকে বিজয়ী করার খায়েশে। বিভিন্ন ইউনিট কমিটি ঘোষণার পর আবার হাত দিয়ে কেটে কেটে নিজেদের গ্রুপের লোকজনের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এসব অনিয়ম কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে জানালেও অজ্ঞাত কারণে তারা মৌনব্রত পালন করছেন। তারা ত্যাগী নেতৃবৃন্দকে বাদ দিয়ে নিজেদের বলয় সৃষ্টির মাধ্যমে আগামীতে আবারও দলের নেতৃত্বে আসার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।
তিনি আরও বলেন- দলের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের উদাসীনতায় সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দল থেকে আসা নেতারা শীর্ষ পদে বসে এসব কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের স্বার্থের প্রতি তাদের আন্তুরিকতাও আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। এ অচলাবস্থা নিরসন না হলে আগামী কাউন্সিল হবে কি না -এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন- যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির পথ রুদ্ধ করে চক্রান্তকারীরা আজ দলটি কুক্ষিগত করে রেখেছে। নিজেদের সুবিধামতো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। একটি শক্তিশালী কাউন্সিলের জন্য এসব কার্যক্রম কঠিন অন্তরায়। জেলা আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারকে পকেটে পুরে আবুল কাহের শামীম গংদের কার্যক্রম দলটাকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি এসব ব্যাপারে দ্রুত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নান ও অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন- আহমেদুর রহমান চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন লস্কর, ইশতিয়াক সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মাহবুবুল হক চৌধুরী প্রমুখ।