‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ে নদীগুলো অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশকে বলা হয় ‘নদীমাতৃক’ দেশ। নদীই ক্রমান্বয়ে গড়ে তুলছে এ ভূখন্ডের আত্মপরিচয়ের বুনিয়াদ। দেশটির সভ্যতা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, উৎপাদন ব্যবস্থা, প্রাণ-পরিবেশ-প্রতিবেশ সবই নদীর আশীর্বাদধন্য। পলি মাটির জমাটের ফলেই দেশটির খোদ ভূখন্ডটি গড়ে উঠেছে এবং এখনও দক্ষিণে সম্প্রসারিত হচ্ছে নদীবাহিত পলির ক্রমাগত জমাটবদ্ধতার কারণে। পৃথিবীর আর পাঁচটা ব-দ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাতন্ত্র হচ্ছে, নদ-নদী কেবল ভূখন্ডটি গড়েই তোলেনি, এর রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বেও ভূমিকা রেখেছে। যে কারণে বলা হয়, বাংলাদেশের ‘প্রকৃতি থেকে প্রতিরক্ষা’ সবই নদীর অবদান। প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে নদী ঐতিহাসিক কাল থেকেই অবদান রেখে আসছে। তাই সে নদীকে রক্ষা করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
মহান বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ’মুক্তিযুদ্ধ ও নদী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। মঙ্গলবার দুপুরে সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত এ সমাবেশ কানাইঘাটের আন্দুলেক তীরে অনুষ্ঠিত হয়।
ভবানিগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. ফখর উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল-হাদীর সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আইনজীবি এডভোকেট মাহবুব উল-আলম, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা কিবরিয়া চৌধুরী সুমন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাহেদ আহমদ চৌধুরী, সাতবাঁক কিন্ডারগার্টেনের প্রতিষ্ঠাতা এম. কামরুল হাসান, যুবনেতা কাওসার আহমদ, ব্যবসায়ী আব্দুস সুবহান, মামুনুর রশীদ,সুবের আহমদ প্রমুখ। কর্মসূচিতে লেকপারের অর্ধ-শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন- বাঙালির হাজার বছরের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত ঘটনা হচ্ছে ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’। একসাগর রক্ত, ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর হাজার হাজার মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ’মুক্তিযুদ্ধের’ মধ্য দিয়েই স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয়মাল্য ছিনিয়ে আনে।
বক্তারা আরও বলেন- বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশ ও প্রকৃতি মুক্তিযুদ্ধে কাজ করেছে অনুঘটক হিসেবে। বিশেষ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধে নদীর অবদান অপরিমেয়। নদ-নদী থেকে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা সুবিধা পেতেই মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণের জন্য বর্ষাকাল অবধি অপেক্ষা করেছিলেন। বাংলার জটিল নদীপথ- পশ্চিম শুষ্ক ও পার্বত্য অঞ্চল থেকে আগত পাঞ্জাবি ও পাঠানদের কাছে অপরিচিত। তাছাড়া বাঙালি নৌকমান্ডোদের দুঃসাহসী নানা অভিযান ও ‘অপারেশন জ্যাকপট’ এর কথা সবারই কম-বেশি জানা আছে। বক্তারা পুরাতন সুরমা বা আন্দুলেকের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসার উপর জোর দেন।