বিশ্বনাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের খাজাঞ্চী একাডেমী’র সংবর্ধনা প্রদান
বিশেষ সংবাদদাতা :
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোকাব্বির খান বলেছেন- একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি হাইস্কুলের ছাত্র ছিলাম। আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু সে সময় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু সে আমাকে জানায়নি, সাথেও নেয়নি। আমৃত্যু তার প্রতি আমার অভিযোগ ছিল, সে কেন আমাকে সাথে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ যায়নি। এই যে মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নেয়ার আক্ষেপ-মর্মবেদনা, সেটা সবসময় আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। আমার মনের ভেতরটা হাহাকার করে।
তিনি বলেন- একাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতার জন্যে, একটি মানচিত্রের জন্যে, একটি লালসবুজের পতাকার জন্যে জীবনের তোয়াক্কা না করে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন আমাদের বীর সন্তানেরা। কোনো কিছুর বিনিময়েই জাতির সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেই ঋণ আমরা শোধ করতে পারব না। যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানীদের শোষণ-নিপীড়ন, বৈষম্য ও ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ আমাদেরকে উপহার দিয়ে গেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন ও তাদেরকে সাথে নিয়েই সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে স্বাধীনতার সুফল ঘরে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের ‘খাজাঞ্চী একাডেমী এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়’ আয়োজিত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ১০জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের পূর্বে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়িত সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকুপের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মোস্তাক আহমদ মোস্তফার পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুল ওয়াহিদ, সালেহ আহমেদ সাকিব কল্যাণ ট্রাস্ট-এর উপদেষ্টামন্ডলীর সভাপতি হাজী মো. তেরা মিয়া, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, খাজাঞ্চী একাডেমী এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুশ শহীদ, এসএমএস মিডিয়া লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আ ক ম এনামুল হক মামুন, সমাজসেবক ও সৌদিআরব প্রবাসী আরশ আলী গণি, বাঁচাও হাওর আন্দোলন বিশ্বনাথের আহ্বায়ক সাজিদুর রহমান সুহেল, পূর্ব বন্ধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. গিয়াস উদ্দিন সোহাগ, বেবী কেয়ার একাডেমীর চীফ ডিরেক্টর মুহিবুর রহমান সুইট, পল্লী বিদ্যুতের সাবেক ডিরেক্টর ফয়জুর রহমান ফজলু, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কয়েস আহমদ, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, বন্ধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সোহেল মিয়া, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বিশ্বনাথের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মনর।
পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মুহিবুর রহমান। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীবৃন্দ। সংবর্ধনা সভায় ‘সালেহ আহমদ সাকিব কল্যাণ ট্রাস্ট’ ও ‘রংধনু স্পোর্টিং ক্লাব পাহাড়পুর-এর সকল দায়িত্বশীল, খেলোওয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং একাডেমী’র পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা মখদ্দুছ আলী, সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল আমিন, বর্তমান ইউপি সদস্য গৌছ আহমদ বাবুল (বাবু), ইউপি সদস্য ফজলুল হক, বিশিষ্ট মুরব্বী আব্দুস সালাম, আব্দুর রহিম, হাফিজ কলমদর আলী, ইলিয়াস উদ্দিন, আজিজুর রহমান, মুরব্বী শামসুদ্দীন, তোহিদ আলম, আফতাব মিয়া, আব্দুল মুতলিব, আলমাছ আলী, আলখাছ আলী, আজাদ মিয়া, খাজাঞ্চী একাডেমি পরিচালনা কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান, আপ্তাব আলী, আবুল কালাম, জিয়া উদ্দিন, আল আমিন, তাজ উদ্দিন, ফাতেমা বেগম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামাল আহমদ, হিরন মিয়া, আফতাব আহমদ, আনসার আলী, আল মামুন আহমেদ, জয়নাল মিয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন, তারেক আহমদ, শরীফ আহমদ, সোহেল আহমদ, এমরান হোসেন জয়, মনজু আহমেদ, বিলাল আহমদ, আজিজুল ইসলাম, তোফায়েল আহমদ, নজরুল ইসলাম, আনছার আলী, শিশু মিয়া, খছরু মিয়া, হাছান উল্লাহ, লায়েছ আহমদ, আল আমিন, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।