দোয়ারায় কালোবাজারে সার বিক্রি : ডিলারশীপ বাতিলের দাবি
বিশেষ সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সদর ইউনিয়নের নৈনগাঁও গ্রামের শামিম আহমদের বিরুদ্ধে কালোবাজারে সার বিক্রির অভিযোগ করা হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগের সাথে মানববন্ধনও করেছেন স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিআইসি অনুমোদিত সার ডিলার রহমত আলীর মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন যাব তার আত্মীয় দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের নৈনগাঁও গ্রামের শামিম আহমদ সারের ডিলার হিসাবে রয়েছেন। চলতি বোরো ইরি মৌসুমে কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত সার অন্য এলাকায় বিক্রয় করা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন। এসময় সারের ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করে দোহালিয়া ইউনিয়নে স্থায়ী নাগরিকের মাঝে নতুন ডিলার নিয়োগের দাবি জানান কৃষক ও এলাকাবাসী।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মিয়া বলেন- দোহালীয়া ইউনিয়নের সার ডিলার হিসেবে যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তার বাড়ি দোয়ারা সদর ইউনিয়নে। সদর ইউনিয়নের বাসিন্দাকে কি করে নিয়োগ দেয়া হলো তা আমরা জানি না। আমাদের দাবী দ্রুত সময়ে নৈনগাঁও গ্রামের ডিলারের ডিলারশিপ বাতিল করা হোক। এখন বোর ইরি মৌসুম কৃষক যথা সময়ে সার না পেলে ফসলের ক্ষতি হবে। তাই দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উচিৎ সারের ডিলারকে সরিয়ে নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়া।
ইউপি সদস্য সুলতান আহমদ বলেন- আমরা কৃষি নির্ভর জাতি। কালোবাজারে যে ডিলার সার বিক্রি করে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। এর আগেও সার ডিলার প্রয়াত রহমত আলী, এরকম কালোবাজারে সার বিক্রি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। এমনকি বেশ কিছুদিন এই মামলায় জেলও কাটছেন। সার ডিলার রহমত আলী মারা যাবার পর সে প্রতিনিয়ত কালোবাজারে সার বিক্রি করে আসছে। এলাকার কৃষক কোন সময় তার কাছ থেকে সার কিনতে পারে নাই। বাজারের খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে বেশী দামে সার কিনতে হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান কালা বলেন- দীর্ঘদিন যাবত ডিলার কালোবাজারে সার বিক্রি করে আসছে। তার গুদামে কয়েক বস্তা সাদা ক্ষতিকর ইউরিয়া সার দেখা গেলেও, সে কখনও নন ইউরিয়া সার তার গুদামে উঠায়নি। রাতের আঁধারে প্রতিবারের সার বিক্রি করে দেয়।
ডিলারের দায়িত্বে থাকা শামিম আহমদ বলেন- আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দোহালিয়া বাজারে আমার গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার রয়েছে। আমি নিয়মিত খুচরা বিক্রেতার নিকট সার সরবরাহ করে আসছি। এখন ইউনিয়নের মধ্যে সারের কোন ক্রাইসেস নেই।
অভিযোগ তদন্তে নিয়োজিত মঙ্গলপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. মহসিন আলী বলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে সারের ডিলারের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মিয়া, সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন, অভিযোগ কারী আব্দুল হাকিম, আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান কালা মিয়া, আব্দুর রশিদ, আজিজুল হক, ইউপি সদস্য সুলতান মিয়া, আফিজ আলী প্রমুখ।