ব্যাডমিন্টন খেলতে ‘ফাও’ বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসব
স্টাফ রিপোর্টার :
পাশাপাশি কয়েকটি কোর্টে লাইটের আলোতে চলছে খেলা। র্যাকেটে বাড়ি খেয়ে শাটল (কর্ক) ছুটে যাওয়ার শব্দে মুখরিত চারপাশ। কেউ সমস্বরে গুণছেন পয়েন্ট, কেউ বা লিভ ইট বলে শূন্যে ঝাঁপিয়ে সজোরে চাপ মারছেন বিপক্ষ দলের কোর্টে।
বুধবার রাতে নগরীর শাহজালাল উপশহর আবাসিক এলাকায় গিয়ে এ ব্যাডমিন্টন খেলার উৎসব দেখা যায়। মেইন রোডের ডি ব্লকের রাস্তার পাশে পুকুরে ওপর গড়ে ওঠা বিশাল পরিত্যক্ত একটি ছাদে তিনটি ব্যাডমিন্টন কোর্ট বানিয়ে খেলায় মেতেছেন পাড়ার তরুণরা। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে চলছিলো খেলা। কোনো কোর্টে সিঙ্গেলস, কোনো কোর্টে চলছিলো ডাবলস্। কোনো আনুষ্ঠানিক টুর্নামেন্ট নয়, তবু খেলা নিয়ে উচ্ছাস-উদ্দীপনার কমতি ছিলো না এতোটুকু।
কেবল উপশহর এলাকায় নয়, শীত জেঁকে বসার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ায়-পাড়ায় জমে ওঠেছে ব্যাডমিন্টনের আসর। শীত মৌসুমের সান্ধ্যকালীন এই খেলা ছেলে-বুড়ো সবার কাছে সমান জনপ্রিয়। তাই সন্ধ্যা নামার পর তরুণ-যুবক ও বুড়োরা র্যকেট হাতে হাজির হন পাড়ার মাঠে। যেখানে প্রশস্ত মাঠ নেই, সেখানেও থেমে নেই ব্যাডমিন্টন। এক চিলতে আঙিনার ওপরও চলছে হাওয়ায় শাটল কর্ক ছোড়ার খেলা।
এদিকে, অন্ধকারে আলো সরবরাহের জন্য এসব খেলার মাঠে বিদ্যুৎ লাইন থেকে মিটার ছাড়া সংযোগ নেওয়া হয়। শীত আগমনের আগ থেকে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার নামে বিদ্যুতের তারে (লাইনে) আংটা লাগিয়ে অবৈধভাবে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার চলছে। এ যেনও অবৈধ পন্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহারের মহোৎসব চলছে। রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে শুরু করে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ‘ফাও’ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সহযোগিতা যোগাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শীত মৌসুমের শুরু থেকে সিলেট নগরীর প্রায় শতাধিক স্থানে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি খেলার মাঠে ৫০০ ওয়াট বা তারও বেশি ক্ষমতার ছয়টি কিংবা আটটি বাল্ব লাগিয়ে খেলার মাঠকে আলোকিত করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর আম্বরখানা, শিবগঞ্জ, টিলাগড়, মেজরটিলা, উপশহর, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, বাগবাড়ি, কাজল শাহ, তেলিহাওর, ভাতালিয়া, মুন্সিপাড়া, শাহী ঈদগাহ, নয়াসড়ক, কলাপাড়া, কাজিরবাজার ও দক্ষিণ সুরমাসহ বিভিন্ন এলাকার পাড়ায়-পাড়ায় প্রায় শতাধিক স্থানে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া, নগরীর বাইরেও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় একইভাবে অবৈধ পন্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ফলে প্রতিরাতে কয়েক হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ উধাও হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিতরণ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শামসই আরেফীন বলেন- আমারা মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করি। এ বছর অভিযান হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। বলেন- আমরা বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি।