বাজারে চাহিদা না থাকায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ
স্টাফ রিপোর্টার :
বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা এবং দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম প্রায় একই পর্যায়ে রয়েছে। ফলে স্বাদ ও মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ বেশি কিনছেন। চাহিদা কমে গেছে ভারতীয় পেঁয়াজের। এ কারণে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন না দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা। বিক্রি করলেও দাম পাচ্ছেন কম। এ পরিস্থিতিতে লোকসান এড়াতে এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন তারা।
হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী- ৯ জানুয়ারি এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চারটি ট্রাকে ৯৭ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। পরদিন একটি ট্রাকে আমদানি হয় সাকল্যে ২৪ টন পেঁয়াজ। ১১ জানুয়ারি একটি ট্রাকে ২৮ টন ও ১২ জানুয়ারি একটি ট্রাকে ২৫ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। এরপর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আর কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বলেন- অভ্যন্তরীণ বাজারে উৎপাদন ও সরবরাহ সংকটের জের ধরে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। চলতি বছরের শুরুতে তা প্রত্যাহার করা হয়। ওই সময়ই আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে এলসি খুলেছি। তবে পণ্যটি আমদানিতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ছে টনপ্রতি ২৫০-২৭৫ ডলার। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে দিতে হচ্ছে ৩৫-৩৭ টাকা। কিন্তু বাজারে তা বিক্রি করতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকায়।
তিনি আরো বলেন- সাধারণত বাজারে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের তুলনায় আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা কম দামে বিক্রি হয়। এখন দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ সরবরাহ বেশি রয়েছে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম রয়েছে বাড়তি। দুটি পণ্যের মধ্যে দামের ব্যবধান সীমিত হওয়ায় ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ। চাহিদা সংকুচিত হয়ে আসায় আমরাও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছি। কেননা লোকসান দিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজের ব্যবসা করা সম্ভব না।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মুকুল হোসেন বলেন- বর্তমানে বাজারে ভারতীয় ও দেশী পেঁয়াজের দাম প্রায় একই। হিলির পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকায়। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। এত কম দামে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করা সম্ভব না। তাতে আমদানি ব্যয় উঠে আসবে না। তাই বাধ্য হয়েই হিলির আমদানিকারকরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন। এতে আর্থিক লোকসানের ঝুঁকি থাকবে না। তবে পেঁয়াজের বিদ্যমান আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে হিলির আমদানিকারকদের পণ্যটি আমদানিতে আগ্রহ বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল আলম বলেন- বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আমদানিকারকদের ভাষ্য- এতে পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে। নতুন বছরের শুরুতে এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে দেশের বাজারে কোনো পেঁয়াজ আসছে না।