আজ শেষ হচ্ছে ‘দামপাড়া’র শুটিং
বিনোদন ডেস্ক
মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল ইসলামের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে ‘দামপাড়া’। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রামের লোকেশন একটানা শুটিং শুরু হয়। কাল ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শেষ হবে ছবির শুটিং। শনিবার লোকেশন থেকে মুঠোফোনে তথ্যটি দিলেন আশনা হাবিব ভাবনা। ছবিতে শামসুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা হক চৌধুরীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন ভাবনা। বলেন- ‘একটানা কাজ করছি। রবিবার শুটিং শেষ হবে। কাজটি করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। কারণ, মাহমুদা হকের দুই বয়সের চরিত্র তুলে আনা অতটা সহজ ছিল না।’
শামসুল হক চৌধুরীর স্ত্রী মাহমুদা হক চৌধুরী এখনো জীবিত আছেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। শুটিংয়ের আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ভাবনা বলেন- ‘একজন বিখ্যাত জীবিত মানুষের চরিত্র করাটা আমার জন্য বড় ব্যাপার। আমি যাঁর চরিত্রে অভিনয় করছি, তিনি শুটিংয়ে চার দিন ছিলেন।’
ভাবনা বলেন- ‘তাঁকে পাশে পেয়ে আমি আরও সাহস পেয়েছি, শিখেছি। শুটিংয়ের কয়েক দিন আগে আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। প্রথম দেখাতেই আমাকে আপন করে নিয়েছেন। আমাকে দেখে তিনি বলেন কি, “জানো, তোমার আর আমার হাসি একই রকমের বড়।” এরপর আরও তিন দিন তাঁর সঙ্গে মিশেছি, আড্ডা দিয়েছি। তাঁর সঙ্গে আমার ছবি আঁকার বিষয়টিরও মিল আছে। এই চরিত্র আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ ১৯৭১ সালে মাহমুদা হক চৌধুরীর ব্যবহার করা একটি ভ্যানিটি ব্যাগও এই ছবিতে ব্যবহার করেছেন ভাবনা। ছবিতে শামসুল ইসলামের চরিত্রটি করছেন ফেরদৌস। তিনি বলেন- ‘আমি এর আগেও মুক্তিযুদ্ধের সিনেমায় অভিনয় করেছি। কিন্তু একটু ব্যতিক্রম, একটি বিশেষ ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছে। আমি আমার চরিত্রে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ চট্টগ্রামবাসী, চট্টগ্রামের সংবাদমাধ্যম, চট্টগ্রাম পুলিশ প্রশাসনকে। কারণ, সবাই “দামপাড়া”কে পূর্ণাঙ্গরূপ দিতে ভীষণভাবে সহযোগিতা করছেন।’
পরিচালক জানান- ‘দামপাড়া’ মূলত বাংলাদেশ পুলিশের বীরত্ব ও দেশপ্রেমের গল্পের সিনেমা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রশাসনের ভেতরে থেকেও যাঁরা লড়াই চালিয়ে গেছেন ও যুদ্ধ করেছেন, এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের কথা ইতিহাসে খুব বেশি উল্লেখ করা হয়ে ওঠেনি, এসপি শামসুল ইসলাম তেমনই একজন। চট্টগ্রামের দামপাড়ার পুলিশ লাইনসে অস্ত্রের গুদামঘর ছিল এসপির দায়িত্বে। পাকিস্তানি আর্মিরা তাঁর কাছে সেই অস্ত্রের গুদামঘরের চাবি চেয়েছিল।
কিন্তু এসপি শামসুল ইসলাম আর্মিদের সঙ্গে বিশেষ কৌশলে সব অস্ত্র চট্টগ্রাম’সহ সারা দেশে ছড়িয়ে দেন। যখন যুদ্ধ শুরু হয়, পাকিস্তানিদের লক্ষ্যই ছিল, কী করে এসপি শামসুল ইসলামকে হত্যা করা যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে অবর্ণনীয় নির্যাতনের মাধ্যমে খুনও করে পাকিস্তানিরা। কিন্তু তাঁর লাশ খুঁজে পাওয়া যায় না। যেহেতু তাঁর স্ত্রী বেঁচে আছেন, তাই স্বামীহারা স্ত্রীর বর্ণনায় গল্পটি বড় পর্দায় তুলে ধরা হচ্ছে। তাঁর বীরত্ব ও আত্মত্যাগের গল্পে নির্মিত হতে যাচ্ছে চলচ্চিত্র ‘দামপাড়া’।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রযোজিত ছবির গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন আনন জামান। পরিচালনা করবেন শুদ্ধমান চৈতন।