স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে বাঁধের কাজ : মধ্যনগরে রক্ষা পেল ২৫ হেক্টর জমির ধান
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে রক্ষা পেলো মেঘনা হাওরের ২৫ হেক্টর জমির কাঁচা ধান। বৃহষ্পতিবার সকালে মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ছয়জন শিক্ষক ও ৬০ জন শিক্ষার্থী হাওরে ধসে যাওয়া বাঁধের সংস্কার কাজ করেন। এতে রক্ষা পেয়েছে মেঘনা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়— মধ্যনগর সদর ইউনিয়নের মেঘনা হাওরে প্রায় ৩০ হেক্টর বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি ২৫ হেক্টর জমির ধান পাকতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে।
বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে মধ্যনগর, ধর্মপাশার একাধিক বাঁধ। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কৃষকদের স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। এরই মাঝে মঙ্গলবার রাতে মেঘনা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ ধসে পড়ে। রাত থেকেই স্থানীয় কৃষকরা বাঁধ মেরামতের কাজ করছিলেন। বুধবার ও বৃহষ্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আসার পর সবাই মিলে বাঁধ সংস্কারের কাজে যোগ দেন। বস্তায় মাটি ভরে ভেঙে যাওয়া অংশে মেরামত করেন শিক্ষার্থীরা।
মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জয় দে ও অলক তালুকদার বলেন— আজ সকালে কলেজে যাওয়ার পর স্যাররা বলেন ‘বাঁধের অবস্থা খারাপ, সবার সঙ্গে মেরামতের কাজ করতে হবে। কৃষক ভালো থাকলে, দেশ ভালো থাকবে।’ আমরাও নৌকা দিয়ে চলে গেলাম বাঁধে। এ কাজে যুক্ত হয়ে খুব ভালো লাগছে।
এ বিষয়ে মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ বিজন কুমার তালুকদার বলেন— গতকাল রাতে মেঘনা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ ধসে যায়। আজ সকালে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আসার পর সবাই মিলে বাঁধ সংস্কারের কাজে গিয়েছে।
এদিকে, জামালগঞ্জে হালির হাওরের হেরারকান্দি ক্লোজার, সুচিয়ার কাড়া, ডাকাতির কাড়া ক্লোজার, মাহমুদপুরের খাল সরেজমিন পরিদর্শন ও মেরামতের কাজ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। হাওর রক্ষায় সবকয়টি পয়েন্টে একযোগে পিআইসি সদস্যগণ, কৃষক, জনপ্রতিনিধিসহ সকলেই বাঁধ টেকসই ও ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য কাজ করেন। শনির হাওরের লালুর গোয়ালা ক্লোজারের হাওর সাইডে কিছু ধ্বসে যাওয়া অংশে সম্পূর্ণ বালু ভরাট করা হয়েছে। মহালিয়া হাওরে ইঁদুরের গর্তের মাধ্যমে হাওরের পানি ঢুকা বন্ধে মেরামত কাজ চলছে। পাশাপাশি পাগনা ও মিনিপাগনা হাওরের বাঁধ নিরাপদ রাখার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই দুটি হাওর অনেকটাই নিরাপদ বলে জানিয়েছেন জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব।