জগন্নাথপুরে ধান গোলায় তুলতে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা
অতিথি সংবাদদাতা
রেজুওয়ান কোরেশী, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় মৃদু শীতল বাতাসে পাকা সোনালি ধান দোল খাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন প্রফুল্লতা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়— পাকা ধান কাটতে হাতে কাচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য আঙ্গিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে— জগন্নাথপুর উপজেলায় ছোট বড় ১৫ হাওরে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। ভালো ফলন পেয়ে কৃষক এবার বেশ খুশি।
কৃষক আইনুল হক বলেন— রোপনের পর ধান গাছে নানা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এতে চিন্তায় পরেছিলাম। অনেকবার কীটনাশক স্প্রে করার ফলে ফসলকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। ফলন খুব ভাল হয়েছে। নতুন ধান পেয়ে আমি আনন্দিত।
সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের বলেন— এ বছর ফসলে ব্যপক পোকামাকড়ের আক্রমন হওয়াতে খরচা পরিমাণে বেশি হয়েছে। মাঝামাঝির দিকে খরায় ক্ষতি করলেও শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়াতে ধানের খুব উপকার হয়েছে ফলে, অনেক ভালো ফলন হয়েছে।
চিলাওরা গ্রামের কৃষক ইসমাইল বলেন— ধানের যা ফলন হয়েছে তাতে আমি অনেক খুশি। কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ কথাটি সরকারকে মনে রাখা দরকার। তাই কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের নিকট আবেদন জানান তিনি।
কেশবপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন— আমি ৮ বিঘা জমিতে মামুন এবং ৪৯ জাতের ধান লাগিয়েছি। উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য না পেলে বরাবরের মতো এবারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। তাই নায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবিও জানান তিনি।
হবিপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন শ্রমিকের মজুরি এবার একটু বেশি। এই সরকার সব সময় কৃষকের পাশে আছেন।বৈরী আবহাওয়া ও পাহাড়ি ঢলে নদ নদীর পানি পেয়ে জগন্নাথপুর তথা সুনামগঞ্জে একের পর এক ফসল তলিয়ে যাওয়ার খবর শুনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধান কাটার শ্রমিক এবার তুলনামূলক কম আসেন। তাই হাওরে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন— বৈরী আবহাওয়ার প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার যন্ত্র এবার বিশেষ কাজে লাগছে। উপজেলায় ৩৬টি যন্ত্র রয়েছে আরও ১০ টি যন্ত্র থাকলে সমন্বয় করে ধান কাটাতে সহায়তা করি।
তিনি বলেন— কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে হারভেস্টার যন্ত্র দিয়ে ধান কাটাতে ব্যপক প্রচারণা চালানো হয়। আমরা নিজেরা কৃষকদেরকে যন্ত্র সংগ্রহ করে দিয়ে ধান কাটাতে সহায়তা করছি।
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন— জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওর অঞ্চলে ৮৯ ভাগ ধান কর্তন হয়ে গেছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকেরা এবার অনেক খুশি।