জৈন্তাপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন ভিডিপি সদস্যরা
জৈন্তাপুর সংবাদদাতা
যে কোন দূর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়ন আনসার ভিডিপির সদস্যগণ।
বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ধান কাটা নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলার উজানগর এলাকার দরিদ্র কৃষক সুলতান মিয়া। ধান কাটতে না পারায় চোখের সামনে ক্ষেতের পাকা সোনালী ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। দিন ৫০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাচ্ছিলেন না। দরিদ্র কৃষক সুলতান মিয়া মাঠের ধান কেটে দিলেন নিজপাট ইউনিয়ন আনসার-ভিডিপি সদস্যরা। তারা কয়েকটি প্লটের পাকা ধান কেটে মাথায় করে কৃষকের ঘরে তুলে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কাজ করে তারা কৃষকের ধান কেটে দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়— জৈন্তাপুর উপজেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বোরো ধানের। এতে জৈন্তাপুর উপজেলায় ১০০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের বোরো ধান কিছুটা ভেসে উঠেছে। প্রায় জমিতে এখনো পানি এ অবস্থায় ধান কাটতে শ্রমিক সঙ্কট দেখা নিয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত পাকা ও আধাপাকা ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক। অবশেষে কৃষকের জমির ধান কেটে দিচ্ছে নিজপাট ইউনিয়ন আনসার ভিডিপির সদস্য’সহ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল হাসিম ও এনামুর হক।
স্বর্ণপদক প্রাপ্ত নিজপাট ইউনিয়ন ভিডিপির দলনেতা বিলাল হোসেন লিটন জানান— উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া কৃষকের পাকা ধান কাটা নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন অসহায় অনেক কৃষক। এ অবস্থায় আমি নিজেই ধান কাটা শুরু করি। আমার সঙ্গে আনসার সদস্যরাও যোগ দেন। আমি আমার ইউনিয়ন আনসার ভিডিপির সদস্যদের নিয়ে উপজেলায় অসহায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছি। গতকাল তাহের মিয়ার জমিতে ধান কেটেছি আজ সুলতান মিয়া ক্ষেতের ধান কাটছি। ক্ষেতে আনসার ভিডিপির সদস্যরা হাজির হলে অবাক হয়ে যান কৃষক সুলতান মিয়া।
লিটন আরো বলেন— বন্যার সময় আমি ডুবে যাওয়া বসত ঘর তেকে মানুষকে উদ্ভার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করলে আমার মন শান্তি পায়।
কৃষক সুলতান মিয়া বলেন— ‘ধান কাটা নিয়ে মহাবিপদে ছিলেম। আনসারা আইছে আমার ধান কাটতে। আমি তারারে দিখিয়া অনেক খুশি। আমি তাদের জন্য দুয়া করি।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ বন্যায় প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করা হয়েছে ১০০ হেক্টর বোরো ধান, ৩৭০ হেক্টর আউস বিজ তলা ও ৬৫০ বিঘা গ্রীষ্মকালীন সবজি তলিয়ে গেছে বলে জানান।