বিশ্বনাথে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে মাদানিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
গত ১৩ মে ২০২২ তারিখে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা প্রশাসন মাদানিয়া মাদরাসার সম্মুখে প্রসারিত চটপটি ও ফল দোকানকে উচ্ছেদ করেন। এই উচ্ছেদ সম্পর্কিত কিছু সংবাদে অস্থায়ী দোকানিরা মাদরাসার মুহতামিমকে ভাড়া দিয়ে আসছে মর্মে যে সংবাদ আসে, তা মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা কমিটির নিকট সংবাদটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে বিবেচিত হয়। বাস্তবতা হলো— এই অস্থায়ী ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা ২০১৮ ইংরেজী হতে অনিয়মিত ভাবে ২০ থেকে ১০০ টাকা মাদরাসার এতিমফান্ডে দিয়ে আসছে। যাহা এতিমখানার রিসিটের মাধ্যমে মাদরাসার অফিস সহকারী সংগ্রহ করে আসছে।
বাস্তবতা হলো— এই অস্থায়ী ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা ২০১৮ ইংরেজী হতে অনিয়মিত ভাবে ২০ থেকে ১০০ টাকা মাদরাসার এতিমফান্ডে দিয়ে আসছে। যাহা এতিমখানার রিসিটের মাধ্যমে মাদরাসার অফিস সহকারী সংগ্রহ করে আসছে।
মাদরাসা সংলগ্ন জায়গাটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কিছু কথা
জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলম মাদানিয়া বিশ্বনাথ, সিলেট দেশের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলামের বহুমুখি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছে। বর্তমানে মাদরাসার বালক-বালিকা উভয় শাখায় পনের শতাধিক শিক্ষার্থী লেখা পড়া করছে। মাদরাসার রয়েছে সরকার নিবন্ধিত এতিমখানা ও পৌর শহরের বৃহৎ জামে মসজিদ। এছাড়াও মাদরাসায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও সেলাই প্রশিক্ষণ বিভাগ চালু রয়েছে। দীর্ঘ ৬ দশকেরও বেশি সময়ে মাদরাসাটি হাজার হাজার আলেম হাফিজ তৈরি করেছে। যারা দেশে বিদেশে সুনামের সাথে ইসলামের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্বনাথের ঐহিত্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিস্তার কেবল শিক্ষা সেবাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সরকারী-বেসরকারী কল্যাণমূলক যে কোন কর্মসূচি বাস্তবায়ন— যেমন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র, টীকা কর্মসূচী, ত্রাণ বিতরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও জনসাধারণের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।
মাদরাসাকে কেন্দ্র করেই ১৯৫৯ সালে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বিশ্বনাথ নতুন বাজারের সৃষ্টি হয়। সেই সময় থেকে অদ্যাবধি মাদরাসা সংলগ্ন সড়ক ও জনপথের এ অংশটি মাদরাসার রক্ষণাবেক্ষণে আছে।
মাদরাসাকে কেন্দ্র করেই ১৯৫৯ সালে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বিশ্বনাথ নতুন বাজারের সৃষ্টি হয়। সেই সময় থেকে অদ্যাবধি মাদরাসা সংলগ্ন সড়ক ও জনপথের এ অংশটি মাদরাসার রক্ষণাবেক্ষণে আছে। এমনকি জায়গাটি একাধিক বার ভূমিদস্যূ কর্তৃক দখলের চেষ্টা করা হলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা কমিটি কঠোর হস্তে দমন করে।
মাদরাসার পশ্চিম পার্শ্বে উত্তর-দক্ষিণ প্রায় ২০০ ফুট লম্বা ও ৫০ ফুট প্রস্থ ২০ ফুট গভীর সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের রাস্তার খাল ছিল, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমোদনক্রমে উক্ত খালে মাদরাসা ছাত্রদের গোসল ও মসজিদের মুসল্লিদের ওজুর জন্য পাকা ঘাট তৈরি করে। দীর্ঘ দিন খালটি মাদরাসার পুকুর হিসেবে ব্যবহার হয়। কালের বিবর্তনে খালটিতে বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে খালের পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে খালটি এক সময় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। ময়লার দুর্গন্ধ মাদরাসার ছাত্র, মসজিদের মুসল্লি ও সাধারণ পথযাত্রীদের জন্য কষ্টকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জায়গাটি মাদরাসার নামে বন্দোবস্ত দেয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে।
উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ মন্ত্রাণালয়ের স্থায়ী বন্দোবস্তের বিধান না থাকায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার পর ভূমি মন্ত্রণালয় সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের ‘নো অবজেকশন’ (জায়গাটি বন্দোবস্ত দিতে তাদের কোন আপত্তি নেই) মর্মে প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহের নির্দেশ করলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ে ‘নো অবজেকশন’ এর আবেদন করে। এ আবেদনটি সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয় আমলে নিয়ে ‘নো অবজেকশন’ এর সার্টিফিকেট প্রদান করে।
জায়গাটির শ্রেণী খালরকম থাকায় বন্দোবস্ত প্রক্রিয়ায় পড়ে না বিধায় স্থানীয় প্রশাসনের মৌখিক অনুমোদনের মাধ্যমে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে জায়গাটি ভরাট করে। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসন মাদরাসা কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে জায়গাটির শ্রেণী পরিবর্তনের আবেদন জানায়। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জায়গাটির শ্রেণী পরিবর্তনের আদেশপ্রাপ্ত হওয়ায় জায়গাটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে রেকর্ড হয়।
পরবর্তীতে মাদরাসা কমিটি ও এলাকার গণ্যমান্য মুরুব্বীগণের সিদ্ধান্তক্রমে মাদরাসার আর্থিক সংকট দূর করার লক্ষ্যে উক্ত জায়গার পূর্বাংশে মাদরাসার পশ্চিম সীমানায় মার্কেট নির্মাণ করা হয়।
পরবর্তীতে মাদরাসা কমিটি ও এলাকার গণ্যমান্য মুরুব্বীগণের সিদ্ধান্তক্রমে মাদরাসার আর্থিক সংকট দূর করার লক্ষ্যে উক্ত জায়গার পূর্বাংশে মাদরাসার পশ্চিম সীমানায় মার্কেট নির্মাণ করা হয়। মাদরাসা মার্কেটের সামনের জায়গাটি পূর্বের মতো মাদরাসার রক্ষণাবেক্ষণে থাকে।
অতপর ২০১০ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সোনা মনি চাকমার আহ্বানে উপজেলা প্রকৌশলীর ড্রইং মোতাবেক উক্ত জায়গায় উপর দিয়ে উপজেলা এলাকার পানি নিষ্কাশনের লক্ষ্যে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ৭/৮ (সাত/আট) লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩ ফুট প্রস্থ্য ও ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে আর.সি.সি ও ব্রীক ড্রেন নির্মাণ করে।
২০১০ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সোনা মনি চাকমার আহ্বানে উপজেলা প্রকৌশলীর ড্রইং মোতাবেক উক্ত জায়গায় উপর দিয়ে উপজেলা এলাকার পানি নিষ্কাশনের লক্ষ্যে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ৭/৮ (সাত/আট) লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩ ফুট প্রস্থ্য ও ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে আর.সি.সি ও ব্রীক ড্রেন নির্মাণ করে।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সংস্কারকৃত ও রক্ষণাবেক্ষণাধীন জায়গাটিতে ২০১৮ সালের শেষের দিকে কয়েকজন ক্ষুদে চটপটি বিক্রেতা ভ্যানগাড়ি মাধ্যমে ব্যবসা করতে চাইলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে। পরিবর্তীতে নতুন বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সহ কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীলগণ গরীব এ সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে মাদরাসার এতিমখানায় ভাড়া দেয়ার শর্তে ব্যবসার সুযোগ দানের অনুরোধ জানালে মাদরাসা কমিটি বৈঠকের মাধ্যমে বাজার কমিটির অনুরোধ শর্ত সাপেক্ষে গ্রহণ করেন। এরপর থেকে কয়েকজন অস্থায়ী চটপটি ও পান দোকানদার জায়গাটিতে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো। বিনিময়ে ভাড়া বাবত প্রথম দিকে ২০ টাকা থেকে শুরু করে শেষের দিকে বিগত জানুয়ারি ২০২২ থেকে ১০০ টাকা করে অনিয়মিত ভাবে মাদরাসার এতিমখানায় প্রদান করে। মাদরাসার অফিস সহকারী এতিমখানার রশিদের মাধ্যমে এ টাকা সংগ্রহ করেছেন।