শিশু মৃত্যুর জের: রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের ভাংচুর-সংঘর্ষ
স্টাফ রিপোর্টার
ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ এনে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাংচুর চালিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। এসময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের সাথে স্বজনদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২ নভেম্বর) রাত ৯ টার দিকে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়— বুধবার বিকেলে রাগীব রাবেয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নাফিসা বেগম নামে দশ বছরের এক শিশু। সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানার মীরেরগাওয়ের শিশু নাফিসাকে বুধবার সকালেই ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নাফিসার মামা আবুল খায়ের জানান— সপ্তাহ খানেক আগে নাফিসার পায়ে লোহা ঢুকে গিয়েছিলো। সম্প্রতি তাতে পুঁজ বেঁধে যায। এর চিকিৎসার জন্য সকালে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করে দেন। এরপর দুপুরে নাফিসার পায়ে চেনতানাশক ইনজেকশন দিয়ে থেকে পুঁজ বের করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই নাফিসার কথা বন্ধ হয়ে যায়। আর বিকেল ৪ টার দিকে সে মারা যায়।
ভুল চিকিৎসায় নাফিসার মৃত্যুর অভিযোগ করে খায়ের বলেন— আমাদের সন্দেহ ডাক্তাররা নাফিসার পায়ে ভুল ইনজেকশন পুশ করেছে। এজন্য সুস্থ একটা মেয়ে হঠাৎ করেই মারা গেছে।
আবুল খায়েরের বন্ধু যুবরাজ দাস বলেন— নাফিসার এমন মৃত্যুতেত তার ক্ষুব্ধ স্বজনরা সন্ধ্যায় হাসপাতালে হালকা ভাংচুর করেন। রাতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমরা হাসপাতালে যাই। কিন্তু এসময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনকে নিয়ে আমি এখন ওসমানী হাসপাতালে এসেছি।
তবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করে রাগীর রাবেয়া হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আওলাদ হোসেন বলেন— ওই শিশুকে ঠিকঠাক চিকিৎসাই প্রদান করা হয়েছিলো। তবে দুপুরে খাবারের পর তার শারিরীক অবস্থা হঠাৎ অবনতি হয়। এরপর সে মারা যায়। খাবারে কোন সমস্যা হয়েছিলো কি না তা পরীক্ষা করে দেখা গেছে।
স্বজনদের উপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন— রোগী মৃত্যুর পর স্বজনরা হাসপাতালে ভাংচুর চালালে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের থামাতে যায়। এ সময় দু’পক্ষে একটু ঝামেলা হয়েছে। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীও আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে জালালবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন— রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তাদের পরিচয় এখনো পাইনি।