‘দ্বন্দ্ব-বিভেদ নিরসন’ করে বিএনপিকে মোকাবিলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সময় সিলেট ডেস্ক

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব, বিভেদ নিরসন করে সংগঠনে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে দলে বিদ্যমান কোন্দল মিটিয়ে ঐক্য গড়ে তুলে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে ‘অলসতা’ ঝেড়ে নতুন উদ্যমে কাজ করতে জেলা পর্যায়ের নেতাদের বার্তা দিয়েছেন দলের সভাপতি। সেই সঙ্গে জনগনের সামনে সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বিএনপিকে মোকাবিলারও নির্দেশ দেন তিনি।
ক্ষমতাসীন দলের প্রধান শেখ হাসিনা মঙ্গলবার তার সরকারি আবাস গণভবনে অনুষ্ঠিত কয়েকটি জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন। বিভিন্ন সময়ে দলীয় সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা। এরই অংশ হিসেবে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সভাপতি। সভায় সিলেট, নেত্রকোনা, গোপালগঞ্জ, কুমিল্লা, ফরিদপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহীসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বলেন— ‘প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মিলেমিশে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। দলকে আবারও ক্ষমতায় আনতে সর্বশক্তি প্রয়োগের নির্দেশনা দিয়েছেন।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন— ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিগত দিনগুলোতে যে উন্নয়ন করেছে, তৃণমূলে প্রচার করার জন্য নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই বলেও দলীয় প্রধানকে নিশ্চিত করেছি।’
এ ছাড়াও দীর্ঘ দিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে বিএনপি নতুন করে মাঠে নেমে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। বৈশ্বিক সমস্যাকে দেশের সমস্যা ও আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা বলে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। জনগণকে সত্য তথ্য তুলে ধরে বিএনপিকে মোকাবিলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বলেন— ‘জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী ও কাজ করতে বলেছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল যেন না থাকে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।’
নেতারা বলেন— বিগত ১৪ বছর সরকারে থাকার কারণে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে মন্ত্রী-এমপিদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে রেষারেষি ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, তা দূর করে দলের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন— ‘আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে, এ জন্য দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিএনপির মিথ্যাচারের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেউ যাতে মিথা তথ্য দিয়ে সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য সোচ্চার হতে বলেছেন।’
ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না উল্লেখ করে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ বলেন— ‘মূল কথা হলো, দলকে ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। দলের বিভেদ দূর করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।’
বৈঠকে শুরুতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের জেলার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন। সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা প্রত্যেকেই বক্তব্য দেন। এরপর উপস্থিত জেলা নেতাদের মধ্য থেকে একজন করে বক্তব্য দেন।
নেতারা জানান— বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যেন আন্দোলন-সংগ্রামের নামে সাধারণ মানুষের জানমালের কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকেও তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।




