৩ দফা দাবিতে সিলেটে চা শ্রমিকদের মশাল মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত
সময় সিলেট ডেস্ক
চা শ্রমিকদের এরিয়ার বিল (বকেয়া বেতন) প্রদান, চা বাগানের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহসহ ৩দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে ‘চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’। সন্ধ্যায় মশাল মিছিলটি মালনীছড়া চা বাগান থেকে শুরু হয়ে লাক্কাতুরা, চৌকিদেখি হয়ে পুনরায় রেষ্টক্যাম্প বাজারে সমাবেশ মিলিত হয়।
চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সংগঠক অধীর বাউরীর সভাপতিত্বে ও রানা বাউরীর পরিচারনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন— সংগঠনের প্রধান সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাস, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক অজিত রায়, চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির অহ্বায়ক হৃদেশ মুদি, লাক্কাতুরা চা বাগানের জাহাঙ্গীর হোসেন,কেওয়াছড়ার সঞ্জিত দাস, হিলুয়াছড়া চা বাগানের মজেন গঞ্জু প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন— নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পর পর চা শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হবার কথা। সব সময়ই মালিকরা এই চুক্তি নিয়ে তালবাহানা করে। ২০২১-২২সালের চুক্তিও আজ পর্যন্ত হয়নি। এদিকে ডিসেম্বরে চুক্তি হওয়ার পূর্বেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ৩শ টাকা মজুরি,চুক্তি সম্পাদনসহ বিভিন্ন দাবিতে গত আগস্ট মাসে টানা ১৯দিন ধর্মঘট করেন চা শ্রমিকরা। নানা ধরণের বাধা, ভয়, ভীতি উপেক্ষা চা শ্রমিকরা আন্দোলনে অনড় থাকেন। এর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শ্রমিকরা ১৭০টাকা দৈনিক মজুরি মানতে বাধ্য হন। প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের ভূমি, শিক্ষা, স্বাস্থের অধিকার নিশ্চিত করারও আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ১৭০টাকা মজুরি দিলেও বিগত ১৯মাসের বর্ধিত টাকা (দৈনিক ৫০টাকা) পরিশোধ করছে না মালিকরা। যা শ্রমিকদের ক্ষোব্দ করছে। এদিকে শ্রম আইনের ১১৫(২) ধারা অনুযায়ী শ্রমিকরা কোন ন্যায় সঙ্গত ধর্মঘট করলে মালিকরা সে দিনগুলির বেতন দিতে বাধ্য। গত ১৯দিনের ধর্মঘট আন্দোলন যে ন্যায় সঙ্গত ছিল এ বিষয়ে ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও এর স্বীকৃতি দিয়েছেন। কিন্তু মালিকরা এই ১৯দিনের মজুরির টাকা শ্রমিকদের দেয় নি। বক্তারা অবিলম্বে চা শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধের দাবি করেন। সাথে সাথে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, শ্রমিকদের এরিয়ার বিল থেকে বঞ্চিত করলে, গোটা চা অঞ্চলে যে অস্থিরতা তৈরি হবে তার দায় ভার মালিক ও সরকারকে নিতে হবে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫শ টাকা এবং ৫কেজি রেশন প্রদানের দাবিও করেন তারা।
বক্তারা আরোও বলেন— ‘জানুয়ারি মাস থেকেই স্কুল কলেজে নতুন ভর্তি শুরু হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই কাগজ কলমের দাম বেড়ে গেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে ১৭০টাকা মজুরি দিয়ে দু’বেলা খাবারই জুটে না। তাই চা বাগানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন রক্ষায় বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরন সরবরাহ ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করতে হবে।’