বিশ্বনাথে স্কুলের বাতিল হওয়া সভাপতি পুনর্নির্বাচনী সভায় মারামারি
বিশ্বনাথ সংবাদদাতা
সিলেট-২ আসনের এমপি মোকাব্বির খানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিশ্বনাথের ‘সিংগেরকাছ পাবলিক বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ’ গভর্নিংবডির সভাপতি পদ থেকে আলহাজ আবারক আলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বাতিল হওয়া সভাপতি পুনর্নির্বাচনী সভায় শনিবার দুপুরে আবারক আলী পক্ষ ও অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পক্ষে মারামরি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে।
তবে পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এ ঘটনায় দু’পক্ষে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করেছে। যে কোনো সময় দু’পক্ষে সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে— চলতি বছরের গত ১২ জুলাই আবারক আলীকে ওই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির সভাপতি করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি অনুমোদন দেয় সিলেট শিক্ষা বোর্ড। এরপর কমিটির বিষয়টি নজরে আসে সিলেট-২ আসনের এমপি মোকাব্বির খানের। তিনি আবারক আলীকে হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি উল্লেখ করে গত ৮ আগস্ট সিলেট শিক্ষাবোর্ডে লিখিত অভিযোগ দেন।
এমপির ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেন। আর বাতিল হওয়া সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচনের জন্য শনিবার ওই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্য-সচিব জোবায়ের হোসাইন মজুমদার সাধারণ সভার ডাক দেন। ওই সভার এক পর্যায়ে এমপি মোকব্বির খানকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন আবারক আলী পক্ষের গভর্নিং বডির শিক্ষানুরাগী সদস্য ফজর উদ্দিন সাগর।
এ সময় অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পক্ষের সিংগেরকাছ বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফরোজ আলী ও দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে স্কুল মিলনায়তনের সভাস্থলেই হাতাহাতি ও মারামরির ঘটনা ঘটে।
এরপর তুমুল হট্রগোল শুরু হলে থানা পুলিশের এআই সাইফুল মোল্লা ও এএসআই রেদওয়ান আহমদ সভাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেন। তারপর উভয় পক্ষের লোকজন স্কুলের সামনে পাকা সড়কে লাটিসোটা নিয়ে ধাওয়া পল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হন। এ সময় সংঘর্ষ এড়াতে আবারও পুলিশ সদস্যরা উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন— একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কোনো অবস্থাতেই সভাপতি হতে পারেন না। স্থানীয় এমপি মোকাব্বির খানকে না জানিয়ে কাগজপত্রাদি জালিয়াতি করে আবারক আলী গভর্নিং বডির সভাপতি হয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সভাপতি পদ বাতিলের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জোবায়ের হোসেন মজুমদার বলেন— সভাপতি পদ পুনর্নির্বাচনী সভাটি তার সভাপতিত্বেই হয়েছে। বিধিমতেই গভর্নিং বডির কমিটি গঠন করা হয়েছিলো।
বাতিল হওয়া সভাপতি আলহাজ আবারক আলী বলেন— পদ বাতিল হওয়ার পর গত ২০ ডিসেম্বর তিনি হাইকোর্টে আবেদন করে পদ বাতিলের বিষয়টি স্থগিত করেছেন। আর স্থগিতাদেশের ডকুমেন্ট সভা চলাকালীন সময়ে তিনি পেয়েছেন।
বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেন— এ ঘটনায় ফের সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।