ফের আলোর মুখ দেখছে গোলাপগঞ্জের আরপিজিসিএল
গোলাপগঞ্জ সংবাদদাতা
সিলেটের গোলাপগঞ্জে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল) ফের আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।
শনিবার সকাল ১১টায় আরপিজিসিএল প্লান্ট পরিদর্শন শেষে সরকারের জ্বালানী ও খণিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাফিজুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের এম আভাস দেন। সরকারের উন্নয়ন খাতে বিঘ্ন ঘটে বছরের পর বছর অচলবস্থার সৃষ্টি হবে এমনটা তো ঠিক নয়। সমস্যা থাকতে পারে তার সমাধান বের করতে হবে।
তিনি বলেন— সবকিছুতে এই সরকারের সফলতা রয়েছে। আশা করি এই প্লান্ট চালুর ব্যাপারেও সফল হব।
পরিদর্শণকালে উপস্থিত ছিলেন— উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ্ মৌসুমী মান্নান, গোলাপগঞ্জ পৌর মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, আরপিজিসিএল জিএম (অপারেশন) খালেদা বেগম, কৈলাশ টিলা গ্যাস ফিল্ডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ইনচার্জ) ফররুখ আহমদ, আরপিজিসিএল ব্যবস্থাপক (প্লাান্ট ইনচার্জ) ফজলুল হক, ব্যবস্থাপক (প্রডাকশন) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার প্রমুখ।
সম্প্রতি বৈশ্বিক যুদ্ধ ও মহামারীর ফলে বিশ্ব বাজারে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের পরিত্যক্ত কূপ ও বন্ধ প্রতিষ্ঠান চালুর সরকারী সিদ্ধান্ত হলে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিঃ এর প্রতিষ্ঠান কেটিএল’র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গোলাপগঞ্জের আরপিজিসিএল এবং এলপিজিসিএল চালুর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এমনটাই জানান নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে— গ্যাস ফিল্ডসমূহের উত্তোলিত কনডেনসেট থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী সিলেটের ৫টি’সহ দেশের ১২টি ফ্রাকশনেশন প্লান্টের উৎপাদন ২০২০ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) মতে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে উৎপাদিত পণ্যের মান ভালো নয়। যার ফলে বিপিসি গ্যাস ক্রয় না করায় এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের কৈলাস টিলা গ্যাস কূপ ও এমএসটি প্লান্ট থেকে উত্তোলিত কনডেনসেট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্লান্টে পরিশোধিত পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল বিপিসিএল এর কাছে বিক্রি করছে। অন্যদিকে গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিঃ (আরপিজিসিএল) ও গ্যাস বোতলজাতকরণ প্রতিষ্ঠান লিকুইড প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিঃ (এলপিজিসিএল) তেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তোলিত অতি উচ্চ মানের এনজিএল (ন্যাচারাল গ্যাস লিকুইড) পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হচ্ছে, যার বাজার মূল্য ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক কর্মকর্তা জানান।
রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিঃ (আরপিজিসিএল) ও গ্যাস বোতলজাতকরণ প্রতিষ্ঠান লিকুইড প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিঃ (এলপিজিসিএল) প্লান্টের উৎপাদন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় সরকার যেমন একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠান দুটির পাশাপাশি এমএসটি প্লান্ট বিপুল পরিমাণ এনজিএল পুড়িয়ে ধ্বংস করছে কয়েক লক্ষাধিক টাকার জাতীয় সম্পদ। আবার প্রতিষ্ঠান দুটি চালু না হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়ছেন কয়েক শতাধিক মানুষ।
হাতেগোনা অল্প সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুধু অফিসের কাগজপত্র ঠিক রাখা ও যন্ত্রপাতি দেখাশোনা করেই দিন যাচ্ছে। সেই সাথে দেশের জাতীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ প্লান্ট দুটিতে উৎপাদন বন্ধের ফলে প্রতিদিন কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
বিদ্যমান এমন পরিস্থিতির একটি সুনির্দিষ্ট সুরাহা হলে দেশের জ্বালানী সংকটের চাহিদা যেমন পূরণ হবে পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এমন ক্রান্তি লগ্নে জ্বালানী ও খণিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সরকারী এ সফর অত্যাধিক গুরুত্ব বহন করে বলে সচেতন মহল মনে করেন।