বিউবোনিক প্লেগ : চীনে নতুন মৃত্যু আতঙ্ক
সময় সিলেট ডট কম
নতুন এক মৃত্যু আতঙ্ক চীনে। ইনার মঙ্গোলিয়াতে এই আতঙ্কে কাঁপছে মানুষ। সেখানে এরই মধ্যে বহু অঙ্গহানি হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। এতে সেখানকার বিভিন্ন গ্রাম পুরোপুরি সিল করে দিয়েছে চীন। এ খবর দিয়েছে বৃটেনের অনলাইন এক্সপ্রেস। এতে বলা হয়, বায়ান্নুর শহরে সম্প্রতি একজন ব্যক্তি ‘মাল্টিপল অর্গান ফেইল্যুরে’ মারা যান। তিনি প্লেগ বা মহামারি সৃষ্টি করে এমন ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তির গ্রাম শনাক্ত করে তা সিল করে দিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় আরেকটি গ্রামকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। বায়ান্নুর কর্তৃপক্ষ বলেছে, মৃত ওই ব্যক্তির বাসভবন লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। মহামারি বিষয়ক ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে ‘আমাদের শহরে মানব প্লেগ বা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে’। গত সপ্তাহে আরো একজন বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই এলাকাটি বাউওতোউ শহর সংলগ্ন। শহরের স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘোষণা দিয়েছেন যে, ওই গ্রামের একজন অধিবাসী সম্প্রতি বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হওয়ার পর সার্কুলেটরি সিস্টেম ফেইল্যুরে মারা গেছেন।
এ খবর পেয়ে তারা দ্রুত ছুটে গিয়েছেন সুজি সিনচু গ্রামে। এখানেই মৃত ওই ব্যক্তি প্রথম এই রোগে সংক্রমিত হয়েছিলেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ওই গ্রামে গিয়ে তা সিল করে দিয়েছেন। এত কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কারণ হলো, বিউবোনিক প্লেগ উচ্চ মাত্রায় সংক্রামক। এ থেকে মহামারি দেখা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা না করালে মৃত্যুর শতকরা হার ৩০ থেকে ১০০ ভাগ।
উল্লেখ্য, বিউবোনিক প্লেগ সৃষ্টি হয় সংক্রমিত এক ধরনের মাছির কামড় থেকে। এরপর তা সবচেয়ে নিকটবর্তী গ্রন্থিতে গিয়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। দ্রুত এসব গ্রন্থি তখন ফুলে ওঠে। তখন এই স্ফীত গ্রন্থিকে বুবো বলা হয়। যদি তাৎক্ষণিকভাবে এর চিকিৎসা করানো না হয় তাহলে ফল হয় খুব বেদনাদায়ক।
সর্বশেষ এই প্লেগ দেখা দিয়েছিল চীনে ১৮ শতকে। একে বলা হয়েছিল দ্য থার্ড প্লেগ প্যান্ডেমিক। এতে মারা গিয়েছিলেন এক কোটি ২০ লাখ মানুষ। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এই প্লেগ সংক্রমণের সময় বেশি আক্রান্ত হয় ভারত ও চীন। কি কারণে এই সংক্রমণ ঘটছে তা আবিষ্কার করতে সক্ষম হন ফরাসি গবেষকরা। তারা দেখতে পান একটি ব্যাকটেরিয়ার কারণে বিউবোনিক প্লেগ সৃষ্টি হচ্ছে। এক্ষেত্রে ইঁদুর বা মাছি কিভাবে এই রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী তারা তাও দেখান।