কোটি টাকা দিলেও আমার ছেলেকে ফিরে পাবো না : রায়হানের মা
সময় সিলেট ডট কম
স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের আলোচিত রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এসআই আকবর ভুঞাসহ জড়িত সকল পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতারের দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত এলাকাবাসী ও রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে এ আলটিমেটাম দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পড়ে শোনান নিহত রায়হানের নানা (মায়ের মামা) শওকত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে রায়হান হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, রায়হান হত্যায় জড়িত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ দোষী সব পুলিশ সদস্যকে অবিলম্বে গ্রেফতার করাসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে হরতাল, সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রায়হান একটি ডাক্তারের চেম্বারে কাজ করতো। কে বা কারা তাকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয়। ভোরে তৌহিদের মোবাইল থেকে রায়হান ফোন করে বলে তাকে বাঁচাতে। তিনি জানায় ১০ হাজার টাকা নিয়ে থানায় যেতে। ভোরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে গেলে রায়হানের চাচাকে দেখা করতে না দিয়ে সকালে আসতে বলেন। সকালে গেলে রায়হানের শরীর খারাপ করেছে এবং মেডিক্যাল যেতে বলে। হাসপাতালে সকাল ৭টা ৫০মিনিটে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমিস করে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পরে উপ-পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) গেলে আমরা আশাবাদী হলেও এখন মামলার ভবিষ্যত অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি। তাই তাদের আইনের আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলনে নামবো আমরা।
নিহত রায়হানের বাড়িতে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তার মা সালমা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলে কোনো দল করতো না। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার একটাই দাবি, আমার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
তিনি বলেন, ১০ হাজার টাকা জন্য আমার ছেলেকে হত্যা করা হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। নিশ্চয়ই আরও বড় কোনো গ্যাং জড়িত রয়েছে। ১০ হাজার কেন ৫০ হাজার টাকা চাইলেও আমি দিয়ে দিতাম।
রায়হানের মা বলেন, ক্ষতিপূরণ বলতে আমি একটাই চাচ্ছি আমার ছেলের হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হোক। কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিলেও আমার ছেলেকে ফিরে পাবো না। ক্ষতিপূরণ একটাই আমার, ছেলে হত্যার ফাঁসি চাই।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে টাকার জন্য অমানবিক নির্যাতন করা হয় নগরীর নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রায়হানকে (৩৩)। পরে ভোরে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন নিহত রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।