সিলেটে সবজির বাজার অস্থির
সময় সিলেট ডট কম
সময় সিলেট ডেস্ক ::
বছরজুড়ে প্রবলবৃষ্টি কারণে কয়েক দফা বন্যায় ফসলসহ শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার কারণে চাল ও সবজির বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত কয়েকমাসে বাজারে চাল ও সবজির দাম কয়েক দফা বেড়েছে। গত দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে আবারো বাজারে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সবজীর বাজারে বৃষ্টির প্রভাব ইতিমধ্যে পড়েছে বলে ক্রেতাদের দাবী।
দামবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, অতিবৃষ্টির কারণে ফসল ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সবজির যোগান নেই। এদিকে, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো কয়েকদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বর্ষাকাল শেষ হলেও বৃষ্টি শেষ হবার কোনো লক্ষণ নেই। শেষ সময়ের এই বৃষ্টির কারণে ফসল সবজির ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা। গত একসপ্তাহে কিছু সবজির দাম কমলেও দুই দিনের বৃষ্টির কারণে আবার বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল সরেজমিনে নগরীর বন্দরবাজার ঘুরে দেখাযায়, বৃষ্টির কারণে বাজারে ক্রেতা খুবই কম। এছাড়া খুচরা সবজি বিক্রেতাও কম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো এখনো শিম, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন ও করোলার কেজি একশ টাকার ঘরে রয়েছে। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাসের মতো এখনো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে শিমের দাম কিছুটা কমে ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আর শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা।
বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুন গত সপ্তাহের মতো ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে উস্তারও। এক কেজি করোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
এই সবজিগুলোর পাশাপাশি বাজারে অন্য সবজিগুলোও স্বস্তি দিচ্ছে না। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, গত সপ্তাহের মতো ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দুল, কচুর লতি। ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি।
লাউয়ের পিস গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বাজারে আসা শীতের আগাম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।
স্বস্তি মিলছে না কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দামেও। এক কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।
এদিকে, সরকার নির্দেশিত আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার নগরীর ট্রেড সেন্টার হাজী নওয়াব আলী মার্কেট ও কালিঘাটে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তাঅধিদপ্তর ও জেলাপ্রশাসনের বাজার কর্মকর্তা। এসময় ফড়িয়াদের কাছ থেকে ক্রয় করা পণ্যের রশিদ না থাকায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় আড়তদারদের।
সবজি বিক্রেতা তাজুল মিয়া জানান, বাজারে সবজি নাই। তাই দাম বেশি। এবার বৃষ্টির কারণে লোকাল সবজি বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো যে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে মনেহয় না সবজির দাম আর কমবে।
এ ব্যাপারে সিলেটের বাজার কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ মোরশেদ কাদের বলেন, সবজির দাম কিছুটা নামা শুরু করেছিলো। এই বৃষ্টির কারণে আবার দাম বাড়িয়ে দিতে পারে ব্যবসায়ীরা। আসলে ব্যবসায়ীদের একটা অজুুহাত চাই, সুযোগ পেলেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বৃদ্ধি করে।