পড়া না পারায় মাদ্রাসায় ছাত্রের উপর নির্যাতন
সময় সিলেট ডট কম
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বালিয়াটিলা হোসাইনিয়া কাদিরিয়া জালালিয়া সুন্নীয়া জুনিয়র মাদ্রাসায় পড়া না পারায় শিক্ষকের নির্যাতনে গুরুতর আহত হয় হিফজ শাখার ছাত্র মুহিম মিয়া (১১)। গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম দফা নির্যাতনের পর ও বিকাল ৪ টায় দ্বিতীয় দফা শিক্ষকের নির্যাতনে সইতে হয়েছে ওই ছাত্রের। পরে আহত ছাত্রকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন ছাত্রের বাবা আব্দুল খালিক।
মাদ্রাসা ছাত্র মুহিমের বাবা আব্দুল খালিক বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক শাহিন আহমদ আমার শিশুর উপর দু’দফা নির্মম বেত্রাঘাত করেন। ছেলের সারা শরীরে অসংখ্য দাগ আছে। শিক্ষকের নির্যাতনে ছেলেটি মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার ছেলের অবস্থা দেখে ভর্তি করেন। তবে মাদ্রাসার সুপার বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধা করার জন্য জোর আশ্বাস দিয়েছেন।
মাদ্রাসা ছাত্র মুহিম জানায়, সকালে ক্লাস শুরু করেন শিক্ষক হাফেজ শাহিন আহমদ। তিনি পড়া শিখিয়ে দেয়ার পর পড়া নিতে আসলে পড়া না পারার কারণে শরীরে বেত দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। প্রচন্ড ব্যথা পেয়ে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে যাই। পরে মা, বাবা বুঝিয়ে আমাকে আবারও মাদ্রাসায় পাঠান। বিকালে ক্লাস শুরু হলে পড়া না পারার কারণে ও হুজুরকে বলে না যাওয়ায় ওই হুজুর আবারও বেত নিয়ে সারা শরীরে একের পর এক আঘাত করেন। পরে খবর পেয়ে আমার বাবা মাদ্রাসা থেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ শাহিন আহমদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রটি না বলে বাড়ি চলে যায়। তাছাড়া পড়ায়ও খুব দুর্বল। তাই কিছুটা শাসিয়েছিলাম। তবে এমনটা হবে ভাবতেও পারিনি। বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সামাজিকভাবে সমাধান করবেন।
বালিয়াটিলা হোসাইনিয়া কাদিরিয়া জালালিয়া সুন্নীয়া জুনিয়র মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শেখ নোমান আহমদ বলেন, অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। আমি মাদ্রাসায় ছিলাম না। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে ছেলেটিকে দেখেছি ও ঔধষপত্র প্রদান করেছি। মাদ্রাসা কমিটিসহ বৈঠকে বসে সমাধান করা হবে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ দেয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।