ট্রাম্পের ‘ভোট জালিয়াতি’ ফাঁদ
সময় সিলেট ডট কম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবারই ট্রাম্পের শেষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তুমুল বিতর্ক আর সমালোচনার মধ্যেই ট্রাম্প জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। আর এজন্য নানা কৌশলও নিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কৌশল প্রতিপক্ষের প্রতি দায় চাপানো। খবর নিউজ উইকের।
নির্বাচনে জালিয়াতি হবে বলে বার বারই দাবি করে আসছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচনের ফলাফল মানবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি চূড়ান্ত ফল সুপ্রিম কোর্ট থেকেই আসবে বলেও দাবি তার। বিষয়টা নিয়ে ভোটের আগেই নানা হিসাব নিকাষ করছেন ভোটাররা।
ট্রাম্পের এই অবিশ্বাস ও শঙ্কা ঠিক কতটা তা নিয়ে তা নিয়ে জরিপ চালানো হয়েছে। প্রায় ১০ কোটি লোক এরই মধ্যে ভোট দিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু এই ভোটারেরা নির্বাচনের ফল শেষ পর্যন্ত মানবেন কিনা, তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।
গেল ৮ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে জরিপে অংশ নেয়া ২ হাজার ১৫ জন মার্কিন ভোটারের মধ্যে ৪৭ শতাংশই জালিয়াতির পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে রিপাবলিকানদের হার অনেক বেশি। বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন রিপাবলিকান অংশগ্রহণকারীদের ৭০ শতাংশ। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এ হার ৩০ শতাংশ।
‘ডাকযোগে ভোট প্রক্রিয়াকরণে মার্কিন ডাক বিভাগকে বিরত রাখতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে’—এই বিবৃতি সমর্থন করে কিনা, অংশগ্রহণকারীদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়। দেখা যায়, ৪১ শতাংশই এই বক্তব্যকে সমর্থন করছেন। এই বক্তব্য বিশ্বাস করেন না ৩১ শতাংশ। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই বক্তব্যে সমর্থন জানানোর হার ৫৬ শতাংশ। আর রিপাবলিকানদের মধ্যে এ হার ৩১ শতাংশ।
‘ডাকযোগে ভোটের কারণে ভোট জালিয়াতি হবে’—এমন বক্তব্য কারা সমর্থন করেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৭ শতাংশই এই বক্তব্য সমর্থন করেন। এ ক্ষেত্রে রিপাবলিকানদের হার অনেক বেশি। বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন রিপাবলিকান অংশগ্রহণকারীদের ৭০ শতাংশ। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এ হার ৩০ শতাংশ।
জরিপের এই ফল বলছে, ট্রাম্পের বক্তব্য রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। অথচ এ সম্পর্কিত বিস্তৃত গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি খুবই বিরল ঘটনা। এমনকি বর্তমান মহামারি পরিস্থিতির আগেও প্রতিটি অঙ্গরাজ্য তাদের ভোটারদের একটি অংশকে ডাকযোগে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিত। কলোরাডো, হাওয়াই, ওরেগন, ইউটা ও ওয়াশিংটনে সব ধরনের নির্বাচনেই ডাকযোগে ভোটের সুযোগ রয়েছে।
‘নির্বাচনে পরাজিত হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বেচ্ছায় অফিস ছাড়বেন না’—এমন বক্তব্যে সমর্থন জানিয়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া ৪৯ শতাংশ ভোটার। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ ডেমোক্র্যাটই এই বিবৃতিতে সমর্থন জানিয়েছেন। রিপাবলিকানদের মধ্যে এ হার ২২ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের ফল মেনে না নেওয়ার যে অবস্থান ট্রাম্প প্রকাশ করেছেন, তারই প্রকাশ ঘটেছে। এই সংখ্যা এত উচ্চ হওয়ায় তাই বিস্ময়ের কিছু নেই। যদিও মেয়াদ ফুরানোর পর কোনো প্রেসিডেন্টই অফিসে থেকে যাননি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছর এ ধরনের বিষয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগ এমনিতেই থাকে। তবে এবারের নির্বাচনে এ ধরনের উদ্বেগ প্রকাশকারীর সংখ্যা অনেক। তাই নির্বাচনের ফল যা-ই হোক, তা এবার সংশয়ের ঊর্ধ্বে থাকবে না। আর এই ফল আসতে বিলম্ব হলে তো কথাই নেই।