চট্টগ্রামের মাহফিলে যাননি মজলিস নেতা মাওলানা মামুনুল হক
বিশেষ সংবাদদাতা :
বিশেষ সংবাদদাতা : ছাত্রলীগ ও যুবলীগের প্রতিহতের ডাক ও রাজপথে অবস্থানের মধ্যে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ধর্মীয় মাহফিলে যাননি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ হতে না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হেফাজতের নবগঠিত কমিটির এ যুগ্ম মহাসচিবের হাটজারীর একটি ধর্মীয় মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে হাটহাজারীর পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আল-আমিন সংস্থা আয়োজিত এই মাহফিলকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে দু’দিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। বৃহস্পতিবার নগরীতে সমাবেশ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরা ঘোষণা দেন- বন্ধবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কটুক্তিকারী মামুনুল হককে প্রতিহত করবেন তারা। শুক্রবার সকালে নগরীর প্রবেশপথ ও বিমানবন্দরে অবস্থান নেয় কয়েক হাজার নেতাকর্মী। তবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক আগের রাতেই সড়কপথে হাটহাজারী যান বলে নিশ্চিত করেন হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আবার দুপুরে মাহফিল শুরু হওয়ার পর মামুনুল হক যোগ দেবেন না বলে গুঞ্জন শোনা যায়। সন্ধ্যায় ওই মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়া হেফাজতের আমির আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী নিশ্চিত করেন- ‘মামুনুল হক মাহফিলে আসছেন না’। তিনি দাবি করেন- ‘মামুনুল চট্টগ্রামেই আসেননি’।
জুনাইদ বাবুনগরী বলেন- ‘মাওলানা মামুনুল হক আজকের সমাবেশে আসতে আগ্রহী ছিলেন না। পরিস্থিতির কারণে আমরাও তাকে আনতে আগ্রহী নই। তাই তিনি আসেননি।’ বাবুনগরী আরও বলেন- ‘আমরা শান্তি চাই। সংঘাত চাই না। আমাদের আন্দোলন নাস্তিকদের বিরুদ্ধে। আজকের মাহফিলে মাওলানা মামুনুল হক প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখার কথা ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে অনুরোধ করা হয়েছে, তাকে যাতে মাহফিলে না রাখা হয়। আমরা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিলাম, তাকে মাহফিলে আনব না।’
হেফাজতের আমির বলেন- ‘আমি সরকারের কাছে জানতে চাই কেন আজকে তার অনুপস্থিতির পরেও চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হয়েছে। তার এই সহনশীল নমনীয় আচরণের সুযোগে যারা মামুনুল হকের সাথে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।’
এদিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন- ‘মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যে মাহফিল আয়োজক কমিটির সাথে বৈঠক করে অনুরোধ করেছিলাম, যাতে মামুনুল হককে বক্তা হিসেবে না রাখেন। আয়োজকরা সেই অনুরোধ রেখেছেন।’
মাওলানা মামুনুল হকের মাহফিলে না যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন- ‘ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হককে প্রতিহত করতে সকাল থেকে ছাত্রলীগ নগরের প্রবেশদ্বারে পাহারা বসিয়েছিল। এ ছাড়া নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। হাটহাজারীতেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধিতাকারী মামুনুল হক ভয়ে মাহফিলে বক্তব্য দেননি। আমরা শুনেছি তিনি গোপনে চট্টগ্রাম ছেড়েছেন।’