ম্যারাডোনা নিজেকে মনেপ্রাণে ‘ফিলিস্তিনি’ ভাবতেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কিংবদন্তির ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা মারা গেছেন। সারা বিশ্বের ফুটবল অনুরাগীরা শোকে মুহ্যমান। কিন্তু ফুটবলার ছাড়াও ম্যারাডোনা ছিলেন একজন হৃদয়বান মানুষ।অন্তত ফিলিস্তিনিরা তা অকাতরেই স্বীকার করবেন।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে দিশেহারা ফিলিস্তিনের কাছে তিনি শুধু মহান ফুটবলারই নন, একজন মহান মানুষও ছিলেন। কারণ ম্যারাডোনা একজন আর্জেন্টাইন হয়েও নিজেকে ফিলিস্তিনিও ভাবতেন। ম্যারাডোনা মাঝে মাঝে বলতেন, মনের দিক থেকে আমিও একজন ফিলিস্তিনি। বেশ কয়েকবার বিভিন্ন উপলক্ষে ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিজের সহমর্মিতা ও সমর্থনও ব্যক্ত করেছেন তিনি।
ম্যারাডোনা মনেপ্রাণে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বক্তিত্ব ছিলেন। ছিলেন একজন সমাজতন্ত্রী। সব সময় তিনি প্রগতিপন্থি আন্দোলনেকে সমর্থন যোগাতেন। তার ব্যক্তিগত বন্ধু ছিলেন ভেনেজুয়েলার সাবেক নেতা হুগো শ্যাভেজ, কিউবার প্রয়াত নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো এবং বলিভিয়ার এভো মোরালেস। হুগো শ্যাভেজের সঙ্গে ম্যারাডোনাকে বুশবিরোধী টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে একাধিকবার। তিনি অকৃত্রিমভাবে সমর্থন করতেন ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামকে। এমনকী ফুটবলার জীবন শেষ করার পরও তার সে সমর্থন অব্যাহত ছিল।
হামাস মুখপাত্র সামি আবু জুহরি বিশ্বব্যাপী ম্যারাডোনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের উদ্দেশে টুইট করে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। সামি লিখেছেন- ‘আমরা ভীষণ ভীষণ শোকার্ত। তিনি ছিলেন মহান ফুটবলার। তিনি ছিলেন #প্যালেস্টাইন কজ-এর সমর্থক।
২০১২ সালে ম্যারাডোনা নিজেকে ফিলিস্তিনি জনগণের একজন ভক্ত হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন- আমি তাদের সম্মান করি। কোনো ভয়-ভীতি কিংবা দ্বিধা ছাড়াই তাদের সমর্থন করি। এর দুই বছর পরে অবরুদ্ধ গাজায় ৩ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যার দায়ে ইসরায়েলিদের প্রতি নিজের ক্ষোভ ও ঘৃণার কথা জানান ম্যারাডোনা। বলেন- ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যা করছে, তা লজ্জাজনক।
২০১৫ সালের এএফসি এশিয়ান কাপে ফিলিস্তিনি জাতীয় ফুটবল দলকে প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানা যায় বিভিন্ন পত্রিকায়। ২০১৮ সালে তিনি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে মস্কোতে এক সংক্ষিপ্ত বৈঠকে মিলিত হয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মাহমুদ আব্বাসকে তিনি বলেন- ‘আমি মনে প্রাণে একজন ফিলিস্তিনি।’ সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোরও ঘোর বিরোধী ছিলেন ম্যারাডোনা। তীব্র সমালোচনা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে সিরিয়াকে ধুয়ে মুছে ফেলতে চায়, এটা বোঝার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হতে হয় না।