বিশ্বনাথের গোয়াহরী বিলে ঐতিহ্যের ‘পলো বাওয়া’ উৎসব
বিশ্বনাথ সংবাদদাতা :
পলো বাওয়া উৎসব। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। আগেকার দিনে বছরে একবার এ উৎসবটি পালন করতেন হাওর পাড়ের লোকজন।
উৎসবের সপ্তাহখানেক আগে গ্রামগঞ্জে তেলের টিনে ডাক-ঢুল বাজিয়ে জানিয়ে দেয়া হতো উৎসবের তারিখ। সেই উৎসবটি ধরে রেখেছেন বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরী গ্রামের লোকজন।
প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম তারিখে গ্রামবাসী দক্ষিণের বড় বিলে ওই উৎসব পালন করে থাকেন। এবারও আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে লোকজন পলোসহ মাছ ধরার বিভিন্ন যন্ত্র নিয়ে বিলের পাড়ে সমবেত হতে থাকেন।
দুপুরে ১১টায় প্রবাসীসহ একসঙ্গে গ্রামের শত শত লোকজন পলো নিয়ে বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় উৎসবটি উপভোগ করতে গ্রামের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, প্রবাসীসহ সবাই বিলের পাড়ে উল্লাস করেন।
বিলের পাড়ে উৎসব উপভোগ করতে যাওয়া গ্রামের জব্বার মিয়া নামের এক বৃদ্ধ জানান- তাদের পূর্বপুরুষেরা প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে এ উৎসব পালন করে আসছেন। তাই তারা প্রতি বছর এ উৎসব পালন করে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আসছেন।
উৎসবে পলো দিয়ে গ্রামের ইকবাল হোসেন, আব্দুল কাহার, আবদুল আহাদ, মিজানুল করিম, হানিফ উল্লা, মতিউর রহমান, জমির আলী, আসাদ আহমদ, আইন উদ্দিন, লিমন মিয়া, সুরত আলী, আবদুল আহাদ, মরতুজ আলী, আমিনুল ইসলাম, ফারুক আলী, সাইদুর রহমান, ফয়জুর রহমান, মুহিবুর রহমান ও ওয়াহিদুর রহমানসহ গ্রামের অনেকেই রুই, রাঙ্গা কারপু, বোয়াল, শউল ও মাগুর মাছসহ হরেক রকমের মাছ ধরেছেন।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছাদিক হোসাইন বলেন- গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব প্রতি বছর উৎসবের মত পালন করা হয়। এতে সব বয়সি মানুষ উৎসবে অংশ গ্রহন করেন। তিনি বলেন- পলো বাওয়া উৎসবে অনেক প্রবাসী সৌখিন মানুষেরা প্রবাস থেকে আসেন।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন বলেন- আমাদের পূর্বপুরুষের পলো বাওয়া উৎসব পালন করতেন। তাদের ধারাবাহিকতা এখনও চলছে পলো বাওয়া উৎসব। এধারা অব্যাহত রাখতে গ্রামবাসী সব সময় পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন করে থাকেন।