সিলেটের ৭ পৌরসভায় মেয়র পদে আ’লীগ ৪ বিএনপি ২ স্বতন্ত্র ১ জয়ী
স্টাফ রিপোর্টার :
দ্বিতীয় ধাপে সিলেট বিভাগের ৭ পৌরসভার মধ্যে ৪টিতে আওয়ামী লীগ, দুটিতে বিএনপি ও একটিতে (বিএনপি’র বিদ্রেুাহী) স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের তিন পৌরসভার দুটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী, একটিতে বিএনপি’র বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী, হবিগঞ্জের দুটির মধ্যে দুটিতেই নবীগঞ্জ ও মাধবপুরে বিএনপি প্রার্থী এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও কমলগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সিলেট বিভাগের এ ৭ পৌরসভায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ৭ পৌর মেয়র, ২৬৩ জন কাউন্সিলর (সাধারণ) ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৯ কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। নির্বাচন চলাকালে দুয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ৭ পৌরসভার মধ্যে একমাত্র সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দ্বারা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাদের বখত নৌকা প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টায় জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।
নাদের বখত পেয়েছেন ২১ হাজার ৬৬৯ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুর্শেদ আলম ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৮৫ ভোট। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রহমত উল্লাহ হাত পাখা প্রতীকে ২ হাজার ৩শ’ ১৪ ভোট পেয়েছেন।
এর আগে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ২৩টি ভোট কেন্দ্রের ১২৬টি কক্ষে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই পৌরসভার ইতিহাসে ২০১৫ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গনিউল সালাদীনকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আইয়ুব বখত জগলু জয়ী হন। ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জগলু আকস্মিক মারা যান। এরপর ওই বছরেরই ২৯ মার্চ উপ-নির্বাচনেও সালাদীনকে হারিয়ে জগলুর সহোদর ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাদের বখত জয়ী হন। শনিবার নাদের বখত পুনরায় জয়ী হন।
শনিবার ভোটগ্রহণকালে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। দিনভর শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কোন প্রার্থীরও কোন অভিযোগ ছিলো না।
দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আরপিননগরের বাসিন্দা শতবর্ষী করিমুননেছা নাতির কাঁধে ভর করে ভোট দিতে এসে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন- ‘জীবনে আর নির্বাচন পাবো কি না জানি না, তাই নাতিকে কাঁদতে কাঁদতে বললাম আমিও পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই। হয়তো এটাই হতে পারে জীবনের শেষ নির্বাচন’। তিনি বলেন- ‘ভাবতেও পারছি না যে আমি ভোট দিতে পেরেছি। ভোটের কথা শুধু সবার মুখে শুনতাম, হাঁটতে পারি না তাই বিছানায় পড়ে থাকি। ভেবেছিলাম ভোট দিতে পারব না। কিন্তু আমার নাতির সঙ্গে এসে ঠিকই ভোট দিতে পেরেছি।’
ছাতক : ছাতক পৌরসভায় টানা চতুর্থ বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আবুল কালাম চৌধুরী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১২ হাজার ৮২৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনিত প্রার্থী রাশিদা আহমদ ন্যান্সি ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৭ হাজার ৯০৮ ভোট। বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে নৌকা প্রতীকে আবুল কালাম চৌধুরী ৪ হাজার ৯১৫ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ছাতকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পৌরসভার ১৯টি কেন্দ্রে টানা ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোটারদের মধ্যে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। মোট ভোটারের প্রায় শতকরা ৭০ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে যথাক্রমে নাজিমুল হক, আফরোজ মিয়া, লিয়াকত আলী, রশিদ আহমদ খছরু, ইরাজ মিয়া, জসিম উদ্দিন সুমেন, তাপস চৌধুরী, শফিকুল হক ও হাজী ছালেক মিয়া বিজয়ী হয়েছে। সংরক্ষিত নারী আসনে তাসলিমা জান্নাত কাকলী, রত্মা রানী মালাকার ও নূরেছা বেগম বিজয়ী হয়েছেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ছিলেন ৩০হাজার ২০৮জন।
অন্যদিকে, আবুল কালাম চৌধুরী ২০০৪ সালের পৌর নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ছাতা প্রতীক নিয়ে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দায়িত্বে ছিলেন ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। ২০১১ সালের নির্বাচনে আবুল কালাম চৌধুরী কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন এবং দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। পরবর্তী ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন।
জগন্নাথপুর: জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানান- সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভায় বেসরকারি ফলাফলে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র আক্তার হোসেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বর্তমান পৌর মেয়র মিজানুর রশীদ ভূঁইয়াকে পরাজিত করে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
পৌর নির্বাচনে ফলাফল নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানায়- সাবেক পৌর মেয়র উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী আক্তার হোসেন ৮৩৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পেয়েছেন ৮০১৮ ভোট। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হারুনুজ্জামান পান ৮১৮ ভোট।
৯ টি ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলররা হলেন- ১নং ওয়ার্ডে শাহীন আহমেদ, ২নং ওয়ার্ডে জিতু মিয়া, ৩ নং ওয়ার্ডে আলাল মিয়া, ৪ নং ওয়ার্ডে কামাল হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ডে সফিকুল হক, ৬ নং ওয়ার্ডে কৃষ্ণ চন্দ, ৭ নং ওয়ার্ডে সুহেল মিয়া, ৮ নং ওয়ার্ডে সাফরোজ ইসলাম, ৯ নং ওয়ার্ডে ছমির উদ্দিন। এছাড়া, ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শিল্পী বেগম, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে বাহারজান বেগম, ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন সুবণা শর্মা বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন- ইভিএম এর মাধ্যমে অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হবিগঞ্জ : নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে সংবাদদাতা জানান- হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভায় টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাত্র ১৬৭ ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থী গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরীকে পরাজিত করে তিনি বিজয়ী হন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।
প্রাথমিক ফলাফলে মোট ১০টি কেন্দ্রে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৭৪৫। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৪৮৫। ২৬০ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হন ছাবির আহমদ চৌধুরী। স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব আলম সুমন জগ প্রতীকে ২৬১৯ ভোট পেয়েছেন।
অন্যদিকে, রাতে ফলাফল ঘোষণার পর সেখানে মৃদু উত্তেজনা দেখা দেয়। অবশ্য কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে এ পৌরসভার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন জাকির হোসেন, ২নং ওয়ার্ডে আব্দুস ছোবহান, ৩নং ওয়ার্ডে নানু মিয়া, ৪নং ওয়ার্ডে যুবরাজ গোপ, ৫নং ওয়ার্ডে লুৎফুর রহমান, ৬নং ওয়ার্ডে জাহেদ চৌধুরী, ৭নং ওয়ার্ডে মো. কবির মিয়া, ৮নং ওয়ার্ডে বাবুল চন্দ্র দাশ, ৯নং ওয়ার্ডে ফজল আহমদ চৌধুরী এবং সংরক্ষিত কমিশনার-১ (১,২,৩) নং ওয়ার্ডে ফারজানা মিলন পারুল, ২নং ওয়ার্ড (৪,৫,৬) পুর্ণিমা রানী দাশ এবং ৩নং ওয়ার্ড (৭,৮,৯) সৈয়দা নাসিমা বেগম নির্বাচিত হন।
সকাল ৮ টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪ টা পর্যন্ত চলে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। এ সময় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। নির্বাচন চলাকালেও কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল ১০টার পর গন্ধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব তিমিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ,জয়নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশী। দুপুর ১২ টার পর পুরুষ ভোটারের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
এদিকে, ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে মাঠে ছিল বিজিবি ও ৪০০ আনসার সদস্য। বিজিবি ২ প্লাটুন, পুলিশের মোবাইল টিম ৫ টি, স্টাইকিং টিম ২টি, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ৯জন, এডিসি ২ জন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ জন।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে আমাদের সংবাদদাতা খবর পাঠিয়েছেন- হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাবিবুর রহমান মানিক বেসরকারীভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৩১ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পংকজ কুমার সাহা (নারিকেল গাছ) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪ হাজার ১ শ ৮৫ ভোট। মাধবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে উপজেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে ফলাফল ঘোষণা করেন।
প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী মোট বৈধ ভোট ১২ হাজার ৮৩৩ টি। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে হাবিবুর রহমান মানিক ৫ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী পংকজ কুমার সাহার চেয়ে ৮৪৬ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। পংকজ কুমার সাহা (নারিকেল গাছ প্রতীক) পেয়েছেন ৪১৮৫ ভোট। এছাড়া আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী শাহ মো. মুসলিম (জগ প্রতীক) পেয়েছেন ৩০৪৯ ভোট। আর আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী শ্রীধাম দাশ গুপ্ত নৌকা প্রতীক নিয়ে ৫৬৮ ভোট পেয়েছেন।
এর আগে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৯টি ওয়ার্ডের ৯ টি কেন্দ্রে ৪০ টি কক্ষে বিরতিহীনভাবে নজিরবিহীন নিরাপত্তায় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হয়। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে সংবাদদাতা জানান- মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ। তিনি নৌকা প্রতীকে ৪ হাজার ৮৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জগ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়া পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৮৫ ভোট। মাত্র ১৫৩ ভোট বেশী পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হন।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী নারকেল গাছ প্রতীকে বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ পেয়েছেন ২ হাজার ৯৯৪ ভোট। আর বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ পেয়েছেন ১৭৭৬ ভোট। এই পৌরসভার মোট ভোটার ছিলেন ২০ হাজার ৭৫৯ জন। এর মধ্যে গতকাল নির্বাচনে মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ১৪ হাজার ২শ ৯৩ ভোট।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) দিনভর এ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয়। ভোটগ্রহণ শেষে সিপারকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সিলেটের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও কুলাউড়া পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন ২০২১ এর রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিয়া ফলাফল ঘোষণা করেন।
এছাড়া সংরক্ষিত-১ মহিলা কাউন্সিলর পদে সুফিয়া বেগম চৌধুরী (আনারস), সংরক্ষিত-২ তাসলিমা সুলতানা আনারস ও সংরক্ষিত-২ কাউন্সিলর পদে মোছাম্মত সুলতানা বেগম (টেলিফোন) বিজয়ী হয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ লোকমান আলী (টেবিল ল্যাম্প), ২ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ কায়সার আরিফ (টেবিল ল্যাম্প), ৩ নং ওয়ার্ডে মো. মনজুরে আলম চৌধুরী খোকন (টেবিল ল্যাম্প), ৪ নং ওয়ার্ডে তানভির আহমদ (উটপাটি), ৫ নং ওয়ার্ডে সাইফুর রশিদ সুমন (ব্রিজ), ৬ নং ওয়ার্ডে মো. জহিরুল ইসলাম খান (ডালিম), ৭ নং ওয়ার্ডে মো. হারুনুর রশীদ (পানির বোতল), ৮ নং ওয়ার্ডে আতাউর রহমান চৌধুরী (পাঞ্জাবি) এবং ৯ নং ওয়ার্ডে মো. জয়নাল আবেদীন বাচ্চু (উট পাটি) বিজয়ী হয়েছেন।
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানিয়েছেন- মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ২৪৫১ ভোটের ব্যবধানে ২য় বারের মতো বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জুয়েল আহমদ (নৌকা) পেয়েছেন ৫ হাজার ২৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মো. হেলাল মিয়া (জগ) ২ হাজার ৮০৬ ভোট।
এছাড়া আওয়ামীলীগের আরেক বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মো. আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) পেয়েছেন ২ হাজার ৭৮৭ ভোট ও বিএনপি’র প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল হোসেন (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৩০১ ভোট। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ২য় ধাপে কমলগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই নির্বাচনে কোনও প্রকার বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
কমলগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রে ১৩ হাজার ৯০৫ জন ভোটারের মধ্যে ১১ হাজার ২৯০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এদিকে কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ১ নং ওয়ার্ডে দেওয়ান আব্দুর রহিম মুহিন, ২ নং ওয়ার্ডে সৈয়দ জামাল হোসেন, ৩ নং ওয়ার্ডে আনসার শোকরানা মান্না, ৪ নং ওয়ার্ডে জসিম উদ্দিন সাকিল, ৫নং ওয়ার্ডে মো. ছাদ আলী, ৬নং ওয়ার্ডে রফিকুল ইসলাম রুহেল, ৭নং ওয়ার্ডে গোলাম মুগ্নি মুহিত, ৮নং ওয়ার্ডে আহাদুর রহমান বুলু, ৯নং ওয়ার্ডে বখতিয়ার খান নির্বাচিত হন।
এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে মুসলিমা বেগম, ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে আয়েশা সিদ্দিকা এবং ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে শিউলী আক্তার শাপলা নির্বাচিত হয়েছেন।