হাসান মার্কেট ও হকার্স মার্কেটের জায়গায় হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’
স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট নগরীতে ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। প্রায় ১৫ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা হবে এই কমপ্লেক্স। যেখানে নগরবাসীর জন্য থাকবে বিনোদন, কেনাকাটাসহ বিভিন্ন সুবিধা। থাকবে উন্মুক্ত উদ্যানও।
নগরীর বন্দরবাজার এলাকার হাসান মার্কেট ও লালদিঘী সিটি সুপার মার্কেটের জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এই কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সিসিক।
সিসিকের এই পরিকল্পনা গত শুক্রবার শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সামনে উপস্থাপন করা হয়। নগরের একটি হোটেলের হলরুমে ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় দুই মন্ত্রী ছাড়াও সিলেটের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। এতে ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’-এর পরিকল্পনাটি বেশ প্রশংসিত হয়।
‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নির্মাণে নকশা প্রণয়নের কাজ করেছে ট্রায়াঙ্গল কনসালট্যান্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর সাথে জড়িত স্থপতি শাকুর মজিদ।
পাকিস্তান আমলে তৎকালিন পাকিস্তানী জেলা প্রশাসকের নামে গড়ে ওঠে হাসান মার্কেট। এছাড়া লালদির্ঘীর পাড়ে হকার্সদের জন্য গড়ে তোলা হয় হকার্স মার্কেট। দুটোই সিসিকের মালিকানাধীন। পাকিস্তানের নাগরিকের নামে করা ‘হাসান মার্কেট’-এর নাম পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন সময় দাবী জানানো হলেও তা থেকে গেছে উপেক্ষিত। এবার এই মার্কেট ভেঙ্গে মার্কেটের জায়গায় বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স করার উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়- হাসান মার্কেট ও লালদিঘী সিটি সুপার মার্কেটের জায়গায় এই কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। এখানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা থাকবে। দৃষ্টিনন্দন নাগরিক চত্বর রাখা হবে।
কমপ্লেক্সের মধ্যে থাকবে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’। যেখানে ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতীকী উপস্থাপনা থাকবে।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে তর্জনী উঁচিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন, তার সেই তর্জনীর আদলে এই কমপ্লেক্সে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। থাকবে ‘বঙ্গবন্ধু প্লাজা’ নামে বহুতল বিপনী বিতান। যেখানে সিনেপ্লেক্স, অডিটোরিয়াম, ১ হাজার আসনের কনভেনশন হল, মুক্তিযুদ্ধের দালিলিক স্মারক সংগ্রহশালা রাখা হবে।
কমপ্লেক্সে থাকবে খোলা পার্ক, বইমেলা বা কুঠিরশিল্প মেলা করার জন্য ৩৪২টি স্টল বসানোর সুবিধা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ রাখা হবে।
হাসান মার্কেট ও লালদিঘী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য কমপ্লেক্সের ভেতরে ৬ তলাবিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণ করা হবে।
‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে’র ল্যাম্পপোস্টগুলো হবে সিলেটের ঐতিহ্য দুটি পাতা-একটি কুঁড়ির আদলে।
এই কমপ্লেক্সের নকশা তৈরি করা স্থপতি শাকুর মজিদ জানান- প্রকল্পটির পুরো নকশা সিসিকে জমা করা হয়েছে। বর্তমানে এটি সরকারি পর্যায়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।