অবশেষে আলোর মুখ দেখছে সিলেট-ঢাকা ডাবল লাইন রেলপথ
স্টাফ রিপোর্টার :
অবশেষে আলোর মুখ দেখছে সিলেট থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডাবল লাইন রেলপথ উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ। সম্প্রতি সিলেটের একটি অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পটির বাস্তবায়নে কাজ আরো এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি বলেছেন- সিলেট-ঢাকা রেললাইন দুই লাইনে উন্নীত করার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে। শুধু তাই নয়, সিলেট-ছাতক-সুনামগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইনকে বর্ধিত করার কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে নেত্রকোনা-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- সিলেট-আখাউড়া রেলপথটি ডুয়েলগেজের পাশাপাশি ডাবল লাইনে উন্নীত করতে ২০১৯ সালের আগস্টে ডিও দেন সিলেটের তিন মন্ত্রী। সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়কমন্ত্রী ইমরান আহমদ। একই মাসে একই অনুরোধ জানিয়ে ডিও দেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
সূত্রটি আরো জানায়- ঢাকা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডাবল লাইন রেলপথ রয়েছে। তবে আখাউড়া থেকে সিলেট অংশটি সিঙ্গেল লাইন রেলপথ। এতে ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। রেলপথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সিঙ্গেল লাইনের কারণে রুটে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল।
জানা গেছে- সিলেট-আখাউড়া রেলপথ ডুয়েলগেজ রূপান্তর প্রকল্পের আওতায় ২৩৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজের পাশাপাশি ডাবল লাইনে রূপান্তর করা হবে। এর মধ্যে ১৭৬ দশমিক ২৪ কিলোমিটার মূল রেলপথ ও ৬২ দশমিক ৯০ কিলোমিটার লুপ লাইন রয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। দরপত্র ছাড়াই দরকষাকষির মাধ্যমে এ ঠিকাদার চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এতে কিলোমিটারপ্রতি যে ব্যয় পড়ছে, তা অন্যান্য প্রকল্পের কয়েকগুণ বেশি।
এদিকে আখাউড়া-সিলেট মিটারগেজ রেলপথটি ডুয়েলগেজে রূপান্তরের চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ১৪৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ তথা ১২৭ কোটি ২৯ লাখ ডলার বা প্রায় ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ঋণ দেবে চীন। চুক্তি মূল্যের বাকি অর্থ ও অন্যান্য ব্যয় বাবদ পাঁচ হাজার ৪৫০ কোটি আট লাখ বাংলাদেশ সরকার সরবরাহ করবে।
প্রকল্পটির ব্যয় বিশ্লেষণে দেখা যায়- রেলপথ নির্মাণে মূল ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ২৮৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর সঙ্গে দর সমন্বয় যুক্ত হবে ২৭ শতাংশ। আর অনিশ্চিত ব্যয় রয়েছে আরও দুই শতাংশ। রয়েছে অন্যান্য খাতের ব্যয়ও। সব মিলিয়ে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৬৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ- কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়বে ৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।